মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কৃষক মো. আব্দুল খালেকের একতলা বসত বাড়িটি দেখে মনে হবে তা দখল করে নিয়েছে মৌমাছির দল। বাড়ি দখল করলেও মৌমাছির চাক থেকে মধু বিক্রি করে বছরে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হয় কৃষকের।
জানা যায়, এক তলা বাড়িটির ছাদের সিলিং, জানালার কার্নিশ, ভবনের পাশে গরুর থাকার ঘরের টিনের চালে এবং গাছের ডালেও রয়েছে মৌমাছির চাক বা বাসা। বাড়ির যেখানে জায়গা পেয়েছে সেখানের বাসা বেধেছে মৌমাছিরা। বর্তমানে বাড়িটিতে রয়েছে ২৫টি মৌচাক। এলাকায় মধু বাড়ি বলে পরিচিতি পেয়েছে বাড়িটি। এমন বাড়িটির দেখা মিলবে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে। গত ৫ বছর ধরে এই বাড়িটিতে বাসা বাঁধছে মৌমাছিগুলো। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে মৌমাছির চাক বাড়িটি অন্য সকল দিকে ঘিরে থাকলেও বাড়ির সামানে অংশে কোনো বাসা বাধেনি। যার ফলে বাড়িতে প্রবেশ করতে অথবা বসবাস কারীদেরও কোনো সমস্যা হয় না। বাড়ির অপর পাশে কৃষকের গরুর ঘর ও রান্না ঘরের চারপাশ জানালা দিয়ে ডেকে দেয়া হয়েছে মৌমাছির জন্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে কৃষক আব্দুল খালেকের বাড়িতে মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মৌমাছির দল। একটি দুটি নয়, ২৫টি মৌমাছির চাক রয়েছে বাড়িটিতে। বাড়ি ও বাড়ির চারপাশে মৌমাছির বাসা থাকার কারণে সৌন্দর্যের একটি অংশ হয়ে দাড়িয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, কয়েক বছর ধরে কৃষকের বাড়িটিতে ২৫ থেকে ৩০টি মৌমাছির চাক থাকলেও কারো কোনো ক্ষতি করে না। বাড়ির মালিকও মৌচাকগুলো দেখে রাখে। প্রতি বছর এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে এই মৌমাছির চাক দেখার জন্য। তবে গত বছর এক ব্যক্তি মৌ চাক দেখতে এসে ফ্লাস জ্বালিয়ে ছবি তুলতে গেলে মৌমাছিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও বাড়ির গরুগুলোকে আক্রমণ করে। ছবি তুলতে যাওয়া ব্যক্তি সে সময় মৌমাছির কামড় খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও গরুগুলোকে কামড় থেকে বাঁচাতে গিয়ে মৌমাছির কামড়ে অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল কৃষক খালেককে। তারপর থেকে মৌচাক দেখতে আসা মানুষদের নিরাপদ দূরত্বে থেকে ও মোবাইল বা ক্যামেরায় ফ্লাস বন্ধ রেখে ছবি তুলতে বলে বাড়ির লোকজন।
বাড়ির মালিক মো. আব্দুল খালেক জানায়, গত ৫ বছর ধরে মৌমাছিরা বাসা বাধে তার বাড়িতে। বছরের ১০ মাসে ২৫ থেকে ৩০টি মৌচাক থাকে এ বাড়িতে। প্রতি বছর মৌচাক থেকে ৪ মণের মতো মধু সংগ্রহ করা হয়। বছরে ১ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মধু বিক্রি করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন