পৌরসভা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে উপকূলীয় এলাকা লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভার নির্বাচন হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারিতে। প্রচারণার শুরুতে জমে উঠেছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। ভোটারদের মন জয় করার জন্য নানা কলা কৌশল নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সিস্টেমে ভোট দেয়া নিয়ে হতাশায় ভোটাররা।চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে একই দিনে দেশব্যাপী ৫৬টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৩১ টি পৌর নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)।এর মধ্যে রয়েছে রামগতি পৌরসভাও। অবশিষ্ট্য ২৫টি পৌরসভায় ব্যবহার করা হবে ব্যালট পেপার।উল্লেখ্য: মেঘনা নদীর তীরবর্তী এ উপজেলা সদর আলেকজান্ডার, চর আলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন এবং চর বাদাম ইউনিয়নের চরসীতা এলাকা নিয়ে ২০০০ সালে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। ২০১৮ সালে এই পৌরসভাকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়। ২০০২ সালে এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।বর্তমানে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২০ হাজার ৯০৫ জন ভোটার রয়েছে। জনসংখ্যা ৪০ হাজার ২৯৩ জন।১১ দশমিক ৮৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এর আয়তন।মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র ও লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এম মেজবাহ উদ্দীন মেজু,ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন সাবেক মেয়র ও রামগতি পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সাহেদ আলী পটু।জাতীয় পার্টির মনোনিত আলমগীর হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতিক নিয়ে মাওলানা আব্দুর রহিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন বিএনপি নেতা আবি আব্দুল্লাহ।নৌকা, ধানের শীষ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবি আব্দুল্লার নারিকেল গাছ মার্কার প্রচারণা চলছে সমানতালে।এবারের পৌরসভা নির্বাচনে এই তিন মার্কার মধ্যেই লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার অপরাধে ইতিমধ্যে আবি আব্দুল্লাহ কে বিএনপি থেকে বহিস্কারও করা হয়।আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম মেজবাহ উদ্দীন মেজু বলেন,রামগতি পৌরসভা নির্বাচন অত্যান্ত সুন্দর পরিবেশ অনুষ্ঠিত হবে।উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পৌরবাসী আমাকে আবারও ভোট দেবে। পৌরবাসীর নাগরিক সেবা ও একটি আধুনিক পৌরসভা উপহার দিতে নৌকার বিকল্প নেই।তাই ভোটাররা এবারও নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে প্রত্যাশা করছেন এ মেয়র প্রার্থী। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের সাহেদ আলী পটু বলেন, ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ ভোটারের কোনো ধারণা নেই।ভোটাররা বিভ্রান্তিতে পড়বেন। যদি ভোটাররা সঠিকভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন,তা হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।স্বতন্ত্র প্রার্থী আবি আব্দুল্লাহ বলেন,অবহেলিত রামগতি পৌরবাসী নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল।আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর নাগরিক সেবা প্রদান ও রামগতিকে একটি আধুনিক ও মডেল পৌরসভা গড়বো ইনশাআল্লাহ।এসব বিষয়ে আব্দুল হান্নান,আকরাম হোসেন শাহীর শাহ ও নোমান নামের ভোটারগণ বলেন, যে প্রার্থী উন্নয়ন করবে তাকেই আমরা নির্বাচিত করব। তবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নিয়ে সবাই হতাশ।চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র এখন চলছে নির্বাচনী আলোচনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে চারদিকে সাজ সাজ রব। পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মোমিন ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো: কেরামত আলী জানান, তফশীল ঘোষনার পর আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছি। সকলের সহযোগীতায় সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারব বলে আশারাখি।নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু করার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।এবার প্রথম বারের মত ইভিএমেই রামগতি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোন ধরনের অরাজকতা বরদাস্ত করা হবেনা বলে হুশিয়ারি দেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন