মুন্সীঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে দীর্ঘদিন ইউপি সদস্যের পেছনে ঘুরেও একটি ঘর পায়নি প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে শীতের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দীর্ঘ কয়েক মাস ঘুরেও একটি ঘর না পেয়ে একদিকে যেমন রয়েছেন চরম হতাশায়, অন্যদিকে শীত আর শিশিরের সাথে যুদ্ধ করে জীবন কাটছে ওই পরিবারের।
সরেজমিনে উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি কুড়ে ঘরে সিরাজ মোল্লার বসবাস। শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লার একটি হাত ছোট এবং উচ্চতায় সে সাড়ে ৩ ফুটের মতো। এছাড়া কানেও কম শোনেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় হালকা ধরনের কাজ করতে পারেন। বাবার পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে ২ শতকের মতো ভিটে বাড়ি পেলেও চাষাবাদ যোগ্য কোন জমি নেই তার। ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত কুড়ে ঘরটি এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পরেছে।
এ ব্যাপারে সিরাজ মোল্লার স্ত্রী সামজেলা বেগম জানান, ঘরের চাল দিয়ে শিশির পরে। আমরা কোন রকম কাথা মুড়ি দিয়ে থাকি। আমাদের এলাকার মেম্বারকে অনেকদিন জানাইছি। সে গুরুত্ব দেয় নাই। আমি কয়েকমাস গেছি সে বলছে ঘর আসলে পাইবা, শুধু এই টুকুই বলে আসছে। আমার কথার কোন গুরুত্ব দেয় নাই সে। সে আরো জানায়, ঘরের চাল ও বেড়া অধিকাংশই ফুটা। অন্ধকার ঘরটির মধ্যে ফুটা দিয়ে সুর্যের আলো অনায়াসে প্রবেশ করছে। তেমনি ওই সমস্ত ফুটো দিয়ে প্রবেশ করছে হিমেল হাওয়াও।
প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা জানান, আমি কামলা দিয়া খাই, আমার কিছু নাই। নিয়মিত কাজ পাই না। স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে আমার জীবন কাটে। আমি খুব অসহায়। আমি অনেক কষ্টে আছি। আমি মেম্বারের কাছে গেছি আমাকে ঘর দিবো কইয়া ঘর দিলোনা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কালাম পাইক জানান, সিরাজ মোল্লা অসহায় লোক। তার ঘর নাই। ঘরের জন্য আমি চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে রাখছি। এবার একটি ঘর আসলেও তাকে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার বর্তমানে যাদের জমি নাই তাদের জমিসহ ঘর দিচ্ছে। কিছুদিন পরে যাদের ভিটা আছে ঘর নাই তাদেরও ঘর দেয়া হবে। খোঁজে নিয়ে ওই প্রতিবন্ধী যাতে ঘর পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন