শুষ্ক মৌসুমেও থেমে নেই যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙন। সত্যি বিচিত্র এই যমুনা নদী। আরো বিচিত্র এর গতি পরিবর্তন।
কখন গড়ে আর কখন ভাঙে তা বলাই দুঃসাধ্য। নদীর একুল ভাঙে ওকুল গড়ে এইতো নদীর খেলা সেই খেলায় মেতে ওঠে গত দু’মাস ধরে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের পাঁচঠাকুরি, বাহুকা ও সিমলা পয়েন্টে ভাঙনে প্রায় ৩০টি বসতভিটা এবং শতাধিক বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খোলা আকাশের নিচে গৃহহীনরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত বিঘা ফসলি জমি। ভাঙন কবলিতরা ভাঙনরোধে জরুরি ব্যবস্থাগ্রহণসহ ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলো পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচঠাকুুর, বাহুকা এবং বালিঘুঘরী গ্রামের কাছে যমুনা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। স্রোতের কারণে নদীর পাড় ধসে যাচ্ছে। প্রতিদিন একটু একটু করে ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এ কারণে নদী তীরের বাসিন্দারা বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে ৩০টি পরিবার সবকিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। হুমকির মুখে রয়েছে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দু’টি মসজিদ, মাদরাসা-ঈদগাহ মাঠ এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু বসতভিটা ও ফসলি জমি। এলাকাবাসীর অভিযোগ মানুষ নিঃস্ব হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ আবু সাইদ জানান, শুকনো মৌসুমে যমুনায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অনেক আশা নিয়ে বোরো ধান রোপন করেছিলাম। কিন্তু চোখের সামনে ফসলসহ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল। তিনি বলেন, ভাঙনের বিষয়ে পাউবোকে অবহিত করা হয়েছে। পাউবো শুধু সার্ভে করে যাচ্ছে, কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তিনি বলেন, যদি ভাঙন এলাকার উত্তরপাশে ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ করা হতো তবে এলাকাগুলো রক্ষা পেত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কুফকুল ইসলাম জানান, ওই এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য ৫৬০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। শীঘ্রই তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে। তবে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ক্রসবার নির্মাণে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন