বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের মেসে হামলার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শণিবার সকাল ১১টার পরে বরিশালর সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি রুটে পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে মালিকÑশ্রমিক সংগঠনগুলো। অপরদিকে ছাত্রÑছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ তাদের ওপর হামলার দ্রুত বিচার এবং পরিবহন শ্রমিকদের নৈরাজ্য বন্ধের দাবীতে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বরিশাল মহানগরীর রূপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ নগরীর অপর পাড়ে কির্তনখোলা নদী তীরে বিশ^বিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশালÑপটুয়াখালীÑকুয়াকাটা ও বরিশালÑভোলা মহাসড়কে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। গত এক সপ্তাহে এ মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ বন্ধ থাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন মহাসড়ক এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার মুখে এলাকার মানুষও আতংকে। বার বার সড়ক পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারন মানুষের দূর্ভোগও সব বর্ণনার বাইরে।
পূর্ব ঘোষিত তিনদফা দাবি না মানায় ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে শুক্রবার সন্ধায় পুনরায় মহাসড়ক অবরোধে নামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী-বরগুনা/কুয়াকাটা ও বরিশালÑভোলা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এরআগে বিকেল ৫ টায় শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিলও কওে ক্যম্পাসে।
এ সড়ক অবরোধের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে বরিশাল সহ ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পুলিশ রহস্যজনক কারণে এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা প্রদান করলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণাও দেয় শিক্ষার্থীরা।
এঅবস্থাতেই বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার দায়ে শুক্রবার মধ্যরাতের পরে দুজন পরিবহন শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। আর এ রেশ ধরেই শণিবার সকাল ১১টার পরে বরিশালÑপটুয়াখালী মিনিবাস মালিক ও শ্রমিক সমিতিগুলো বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ছাড়াও খুলনা বিভাগের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে এ অঞ্চলের ১৭টি রুটে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরুর কিছুক্ষনের মধ্যেই বিশ^বিদ্যালয়ের ছত্ররাও ক্যাম্পাসের সামনে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। পরিস্থিতির অবনতি রোধে মিনিবাস টার্মিনাল এলাকা সহ বিশ^বিদ্যলয় ক্যম্পাসের বাইরে বরিশালÑপটুয়াখালী-বরগুনা/কুয়াকাটা ও বরিশালÑভোলা মহাসড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল ৭ টা থেকে পরবর্তী ১০ ঘন্টা এসব মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিকেলে মঙ্গলবারের রাতের হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা,দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা নেয়ার তিনদফা দাবি উত্থাপন করে শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি পূরণে শুক্রবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলো তারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ৭ দিনের সময় চেয়েছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন