সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কটে বিপাকে মানিকগঞ্জের খামারীরা

শাহীন তারেক, মানিকগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক পলাশ মিয়া। আট বছর ধরে কৃষি কাজের পাশাপাশি বাড়িতেই খামার করে গরু লালন পালন করছেন। বর্তমানে তার খামারে ছোট বড় ২০ গরু রয়েছে। কিন্তু গো-খাদ্যের সঙ্কট হওয়ায় সদর উপজেলার সলন্ডী মবেদ মার্কেটে এসেছেন ধানের খড় কিনতে। তিনি বলেন, বন্যার আগে যে ধানের খড়ের দাম ছিল ৫/৭ টাকা আটি। সেটি এখন ১০/১৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় গরু লালন পালন করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর দু-দফা বন্যায় আউশ আমন ধান নষ্ট হওয়ায় মানকিগঞ্জে গো-খাদ্য খড়ের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খামারীরা। বর্তমানে গো-খাদ্যের চাহিদা থাকায় প্রতি আটি খড় বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। এতে পশুর মালিকরা চড়া দামে খাদ্য কিনে খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকে পশু পালনও ছেড়ে দিচ্ছেন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর উঁচু জামিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। জেলায় গো-খাদ্য চাহিদা থাকায় ময়মনসিংহ, গাজীপুর, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক যোগে এসব ধানের খড় নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে নামিয়ে এসব খড় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
গরুর খামারীরা জানান, গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গবাদী পশু পালন করে লাভবান হতে পারছেন না তারা।
বাধ্য হয়ে গরুর খাদ্য ব্যয় কমাতে প্রতিদিন ভুট্রা ঘাস ও খেসারি কলই কেটে খাওয়াচ্ছনে। পিপুলিয়া গ্রামের খামারী নৈমুদ্দিন মিয়া জানান, এক কেজি ওজনের খড়ের আটি ১৪ থেকে ১৮ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। তাও আবার এলাকায় পাওয়া যায় না। অনেক দূর থেকে সরবরাহ করতে হয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর গরু লালন পালনে খরচ বেশি লাগছে। মানিকগঞ্জ পৌরসভার সানোয়ার হোসেন জানান, তার তিনটি গরু হযেছে। খড়ের অভাবে কাচা ভুট্রা ঘাস ও খেসারি কলই কিনে খাওয়াতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, প্রতি শতাংশ কলাই ঘাস দুইশ টাকা হিসাবে কিনতে হচ্ছে। এত দাম দিয়ে খাদ্য কিনে গরু লালন পালন করতে আমার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাবসায়ী মবেদ আলী জানান, আমাদের এলাকায় গরুর খাদ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই আমি টাংগাইল, ময়মনসিংহ, রংপুর জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ধানের খড় সংগ্রহ করে ট্রাকযোগে মানিকগঞ্জে নিয়ে আসি। চাহিদা থাকায় দামও ভাল পাচ্ছি। বিক্রি করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ বর্মকর্তা ডা. মো. মাহাবুবুল ইসলাম জানান, এ জেলার সাতটি উপজেলায় বর্তমানে ৫ লাখ ৮৭ হাজার গবাদিপশু লালন পালন করছেন। এ ছাড়া ভেড়া হয়েছে ৩৮ হাজার, মহিষ ১৫ হাজার ও ছাগল রয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার। রোগ প্রতিরোধের জন্য এসব গবাদিপশুকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। গো-খাদ্যের জন্য সরকারিভাবে ঘাসের বীজ ও চাষের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন