আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শহীদ মিনারে আগে-পরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করাকে কেন্দ্র করে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যুবলীগের দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল সকালে উপজেলার তারাব পৌরসভার সুলতানা কামাল সেতু সংলগ্ন শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতিক) ও তার সহধর্মীনি তারাব পৌরসভার মেয়র মিসেস হাসিনা গাজীসহ নেতাকর্মীরা সুলতানা কামাল সেতু সংলগ্ন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যান। এসময় তারাব পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন ফরাজিসহ তার লোকজন পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান করেন। এছাড়া তারাবা পৌর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনসহ তার লোকজনও পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন। এসময় আগে-পরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা নিয়ে উভয় গ্রুপের লোকজনের সাথে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের লোকজনই পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই একে অপরকে কিলঘুষি মেরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে নাঈম, তানহা, অপু, রোবেলসহ অন্তত ১০ জনের মতো জখম হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে মন্ত্রী ও উপস্থিত পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। দুই পক্ষই ঘটনার সত্যতা শিকার করেন। এ ধরনের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলে মনে করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি তারাব পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে তারাব পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন আনোয়ার হোসেন ও রুহুল আমিন ফরাজি। নির্বাচনে প্রচারণাকে কেন্দ্র করে গত ১২ জানুয়ারি রাতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায়ে সংঘর্ষটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়। ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে রুহুল আমিন ফরাজির শত্রুতা সৃষ্টি হয়।
এর আগে, গত শুক্রবার সকালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির লোকজনের সঙ্গে পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর প্যানেল মেয়র পনির হোসেনের লোকজনের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে রুহুল আমিন ফরাজি বলেন, আমরা শহীদ মিনারে শান্তিপূর্ণভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গেলে আনোয়ার হোসেনসহ তার লোকজন বাধা দিলে ঘটনা ঘটে। অপর দিকে আনোয়ার হোসেন বলেন, রুহুল ফরাজিসহ তার লোকজনই বাধার সৃষ্টি করে এ ঘটনা ঘটায়।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন বলেন, রূপগঞ্জে যুবলীগ শক্তিশালী। শহীদ মিনারের সামনে যুবলীগ নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেশি ছিলো। ফুল দেয়া নিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে কিন্তু কারো সঙ্গে কোন বিরোধ নেই। সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেনি। রূপগঞ্জ থানার ওসি মহসিনুল কাদির বলেন, যুবলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন