বিদেশে রপ্তানি হওয়া সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী টালি শিল্পে ধস নেমেছে। যে কেনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে টালি উৎপাদনের কারখানা। উৎপাদিত টালির মধ্যে রেকট্যাংগুলার, হেড ড্রাগুলার, স্কাটিং, স্টেম্প, স্কয়ার, রুপ ব্রিকস ও ফ্লোর টালি উল্লেখযোগ্য।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা সদরের মুরারীকাটি গ্রামের কয়েকটি কুমার পরিবার রপ্তানিজাত মাটির টালি উৎপাদন শুরু করে দুই হাজার সালের দিকে। এরপর ২০০৪ সালে ইটালিয়ান আমদানিকারক রাফাইলী আলদো মুরারীকাটি থেকে প্রথম টালী আমদানি করেন।
বিদেশে টালি রপ্তানি শুরু হলে মুরারীকাটি গ্রামের অধিকাংশ কুমার স¤প্রদায়ের পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে থাকে। প্রায় ৯০ শতাংশ পরিবার টালি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রপ্তানিজাত টালির ব্যবসা ছিলো রমরমা। কিন্তু নানান সংকটে ৫ বছরের ব্যবধানে উৎপাদন সক্ষম প্রায় ৫০ কারখানার মধ্যে ৪০টি বন্ধ হয়ে গেছে।
কলারোয়ার মুরারীকাটি গ্রামের টালি শিল্পী গোষ্ট পদ পাল জানান, বিদেশে চাহিদা না থাকায় এখন একেকটি টালির উৎপাদন খরচ উঠানোই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, একটি ফ্লোর টালি উৎপাদনে খরচ পড়ে ৮ থেকে ১৩ টাকা। সেখানে রপ্তানিকারকরা দাম দিচ্ছে ৯ থেকে ১৪ টাকা। প্রতিটি রিক্ট এ্যাংগুলার টালি বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকা। অথচ এটির উৎপাদন খরচ ৬ থেকে সাড়ে ৬ টাকা। হেড ড্রাগুলার টালি খরচ পড়ে ৫ টাকা, বিক্রিও হচ্ছে ওই ৫ টাকা দরে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। তারপরও আশায় রয়েছি, যদি কোনোভাবে আবারো আগের অবস্থানে ফিরে আসা যায়। তিনি এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সাতক্ষীরা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু জানান, চিংড়ি রপ্তানির মতোই বেশ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছিলো কলারোয়ার টালি শিল্প। কিন্তু নানান সংকটের কারণে সম্ভাবনাময় শিল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শিল্পটিকে বাঁচানো গেলে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী টালি বিদেশে রপ্তানি করে সরকারের অনেক রেমিটেন্স উপার্জন হতো। একই সাথে উৎপাদন শিল্পের সাথে জড়িতরা উপকৃত হতো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন