বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

কালের সাক্ষী ঐতিহাসিক রাজবাড়ি : নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ

প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এমএ ছালাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে : সংস্কারের আড়ালে এ এলাকার কালের স্বাক্ষি নওগাঁর মহাদেবপুরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ির শেষ নিশানাটুকুও ভেঙে ফেলা হচ্ছে অবলীলায়। অভিযোগ রয়েছে, ঐতিহাসিক নিদর্শন সমৃদ্ধ এ রাজবাড়ি ভেঙে ফেলাতো দূরে থাক এর কোন প্রকার ক্ষতিসাধন করার উপরেও প্রতœতত্ত্ব বিভাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাই অমান্য করে ঐতিহাসিক এ রাজবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় ৪ তলাবিশিষ্ট বিশাল আকারের ২টি একাডেমিক ভবন থাকার পরেও আরো প্রয়োজনের বাহানায় রাজবাড়িসহ এর ভাস্কর্যগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সংস্কারের আড়ালে ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন এসব নিদর্শন ও ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার অর্থ হচ্ছে উপজেলা থেকে ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহকে চিরতরে বিদায় দেয়া। তারা জানান, রাজবাড়ির চিহ্ন ও নিদর্শন সমূহ মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে। ঐতিহাসিক এ রাজবাড়ির ভেঙে ফেলা দেয়ালে প্রাচীন আমলের দুষ্প্রাপ্য শ্বেত পাথরে খোদাইকৃত লেখা থেকে জানা যায়, ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত ভাগ হয়ে যাওয়ার সময় রাজা ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় বাহাদুর স্বপরিবারে তার ওই রাজবাড়িসহ প্রচুর স্থাবর এবং অস্থাবর ধন সম্পদ রেখে ভারতে চলে যান। রাজা ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় বাহাদুর ভারতে চলে যাওয়ার পর তার ওই রাজবাড়িসহ অন্যান্য সম্পদসমূহ পাকিস্তান সরকার দখলে নেয়। এরপর পাকিস্তান সরকারের রাজশাহী বিভাগের ডেপুটি কমিশনার এমএ সাঈদ ১৯৬৭ সালে ৯৮ শতাংশ জমির ওপর থাকা এ রাজবাড়িটিকে জাহাঙ্গীরপুর কলেজ নামকরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, রাজবাড়ি এবং দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের নিদর্শন ভেঙে ফেলাসহ রাজবাড়িটির সকল চিহ্ন মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর প্রভাব খাটিয়ে এখনও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালী একটি মহল। এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৪ সালে এ কলেজকে সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। নিজের উপর আরোপিত অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ অধ্যক্ষ মো. আঃ মজিদ বলেন, এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি কলেজের সম্পত্তি দখল করে ইচ্ছেমত ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছেন। তবে কলেজের সম্পত্তি রক্ষার্থে সীমানা প্রাচীর দেয়ার জন্য রাজবাড়ির কিছু অংশ ভাঙার কথা স্বীকার করেন কলেজ অধ্যক্ষ আঃ মজিদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন