মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ৩৩ কেভি বিদ্যুত লাইনে কার্যত কোনো বড় সমস্যা না থাকলেও উপজেলা ও পৌরবাসীদের প্রতিদিন গড়ে ১২ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। গত ১০আগস্ট থেকে চলছে পল্লী বিদ্যুতের তেলেসমাতি। ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দিনে কমপক্ষে ১০বার বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। এই পরিস্থিতিতে প্রচ- গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বাসা-বাড়ির লোকজন বারান্দায় ও রাস্তায় রাস্তায় পায়চারি করে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ এলাকায় ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ার নাটক সৃষ্টি করলেও বিকল্প কোনো ট্রান্সফরমার বসাতে দেখা যায়নি। বিদ্যুতের নন্দীগ্রাম এরিয়া কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে প্রায় সাড়ে ২৩হাজার গ্রাহক। গ্রাহকরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও একটানা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। ঘনঘন লোডশেডিং ও বিদ্যুত বিপর্যয়ে প্রতিদিন ও রাতে ১২ঘণ্টায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন কর্মমুখী মানুষ। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে উপজেলা ও পৌরবাসী। যেকোনো সময় ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সূত্র মতে, এ উপজেলায় বিদ্যুতের লাগাতার লোডশেডিং ও কয়েকদিনের অব্যাহত ভ্যাপসা গরমে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রচ- খরাতাপে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ ও পশুপাখি। ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া, জন্ডিস ও ভাইরাসজনিত জ্বর। দিনরাত মিলিয়ে ৮/১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। সন্ধ্যা থেকে প্রতিদিনই রাত ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের লুকোচুরি খেলা হয় বলে মন্তব্য করেছেন একাধিক গ্রাহক। লোডশেডিং কবলে পড়ছে গোটা উপজেলা ও পৌর এলাকা। এতে করে চুরি-ছিনতাই বেড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে টানা লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। রাতে গরমের কারণে মানুষ ঘুমাতে পারছে না। ফলে দেখা দিচ্ছে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে বয়স্ক ও শিশু। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় বিঘিœত ঘটছে। বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং ও ভ্যাপসা গরমে গত এক সপ্তাহ ধরে বাসা-বাড়ি ছেড়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ রাতের ঘুম ফেলে সড়ক মহাসড়কে ঘুরে বেড়িয়ে পায়চারি করতে দেখা গেছে। উপজেলা ও পৌর এলাকায় বিদ্যুতহীন অবস্থায় থাকার পর দুপুর ২টায় একনজর বিদ্যুতের দেখা মেলে। তবুও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। অসহায় হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষগুলো। নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মানুষগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। বেশিরভাগ দোকানি দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছেন। গরম বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিও বেড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন