ফেনী জেলা সংবাদদাতা
ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গা জবর দখলের চেষ্টা ও হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই পরিবারটি। সন্ত্রাসীদের বার বার হামলা ও হুমকির মুখে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। তারা সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের সহযোগিতাও চেয়েছেন। মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী জানায়, নেয়ামতপুর গ্রামের আলী রাজা ভূঁঞা বাড়ির মৃত গোলাম মোস্তফা ভূঁঞার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউছুপ ভূঁঞাগংদের সাথে র্দীঘদিন যাবত একই বাড়ির মৃত আবুল কাশেম বাহারের ছেলে কামরুজ্জামান মামুন গংদের বসত বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ১৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০ টায় মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউছুপ ভূঁঞার মালিকীয় দখলীয় জায়গার মধ্যে তারা ঘর করার সময় অতর্কিতভাবে হামলা চালায় এবং বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে কামরুজ্জামান মামুন তার ভাই আক্তারুজ্জামান ও হাসানুজ্জামানসহ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউছুপ (৭৫), তার স্ত্রী বিবি মরিয়ম (৬০) ও ছেলে শাখাওয়াত উল্যাহ সোহাগসহ (৩০) একই পরিবারের ৩জন আহত হয়। এব্যাপারে আবু ইউছুপ বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এর আগে গত ১২ এপ্রিল আবু ইউছুপের মালিকীয় দখলীয় জায়গাটি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে কামরুজ্জামান মামুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। এসময় সন্ত্রাসীরা বেলজিয়াম, বট করই, মেহগনী, আমগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে ফেলে এবং জোরপূর্বক একটি ঘর নির্মাণ করে। এতে বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে গাছগুলি নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আবু ইউছুপ ভূঁঞা বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় কামরুজ্জামান মামুনসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং ২৫) দায়ের করেন। মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউছুপ ভূঁঞা জানান, ফেনী সদরের বোগদাদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজিজ আমাদের প্রতিপক্ষ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রভাবিত হয়ে কোন ধরনের ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা আমাদেরকে হয়রানি করে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলার বিষয়ে জানতে সাংবাদিকেরা বোগদাদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আজিজকে প্রশ্ন করলে হামলার ব্যপারে তিনি কিছু জানেন না বলে অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। লেমুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম ও প্যানেল চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার জুলফিকার আলী জানান, মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউছুপ ভূঁঞা গং ও কামরুজ্জামানগংদের মধ্যে বিরোধীয় জায়গা নিয়ে সালিশী বৈঠক হয়। সালিশে দুই পক্ষের মানীত প্রতিনিধি ও উভয় পক্ষের স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যায় যেই জায়গাটা নিয়ে বিরোধ চলছে সেটি মূলত আবু ইউছুপ ভূঁঞার। কামরুজ্জামান মামুন গংরা সেখানে জোরপূর্বক গাছ কেটে ঘেরাও দিয়ে দেয়। কামরুজ্জামান মামুন গংরা সালিশী সিদ্ধান্ত অমান্য করে আবু ইউছুপ ভূঁঞাগংদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং আবু ইউছুপ ও তার পরিবারের উপর হামলা করে ও বোমা নিক্ষেপ করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে। তারা আরো জানান, কামরুজ্জামান মামুন মূলত মাদক ব্যবসায়ী, বোমা তৈরির কারিগর ও দুর্ধর্ষ ক্যাডার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন