পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : রংপুরের পীরগাছায় ইন্ট্রিগেটিভ এগ্রিকালচার প্রোডাক্টিভিটি প্রজেক্ট (আইএপিপি) ও ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট (এনএটিপি) প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। দেশের কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কৃষি, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিভাগসহ ৫টি বিভাগে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে প্রান্তিক চাষিদের আর্থিক, কারিগরিকসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়ার কথা। প্রকল্প শুরু থেকে গত ৫ বছরে প্রকল্প ২টি বিপরীতে পীরগাছায় আর্থিক বরাদ্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে আসছে। পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ২টি প্রকল্পের কার্যক্রম সরেজমিন দেখতে গিয়ে প্রকল্প তো নয় হরিলুটের দৃশ্য চোখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও অর্থ হরিলুট হয়েছে কৃষি খাতে। এ খাতে গত ২ বছরে বরাদ্দ পাওয়া প্রায় ৩০ লাখ টাকার অধিকাংশ অর্থ হরিলুট হয়েছে। উপজেলার ৩৫টি লাইভলি হুট ফিল্ট স্কুল (এলএফএস)-এর মাধ্যমে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারসহ ফসলের বহুমুখীকরণ ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন দিক শিক্ষা দেয়ার কথা। এ জন্য কাগজে-কলেমে স্কুল স্থাপন দেখিয়ে নারী ও পুরুষ মিলে ৩০ জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি দেখানো হয়। এদেরকে প্রশিক্ষণ ও যাতায়াত বাবদ প্রতি কৃষককে ৩০০ টাকা করে দেয়ার কথা। কিন্তু প্রশিক্ষণার্থীদের নাম মাত্র অর্থ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জৈব সার তৈরির জন্য চালা তৈরির লক্ষ্যে ১৮ মিটার প্রস্থের ৭ ফুট দৈর্ঘ্যেও ৬টি ঢেউটিন বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা কোনখানে বিতরণ করা হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের এনএটিপি প্রকল্পের বরাদ্দ আসলেও গত ৭ মাসে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। আইএপিপি প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া অর্থ দিয়ে গত ৭ মাসে ২৩৮ জন কৃষকের মাঝে ৫ কেজি করে বোরো বীজ, ১৪০ জনের মাঝে ২ কেজি করে ভুট্টা, ২০০ জনের মাঝে ১৬০ গ্রাম সবজি, ৫৪০ জনের মাঝে ১ কেজি সরিষা ও ২৫২ জন কৃষকের মাঝে ১০ কেজি গম বীজ বিতরণ করা হয়। কিছু কৃষকের মাঝে সার বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৩৯০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ সকল কার্যক্রমের বিপরীতে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়। প্রকল্পের বিপরীতে নামমাত্র অর্থ খরচ করে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজেশে সমুদয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। পীরগাছা উপজেলায় বর্তমানে প্রকল্প ২টির কোন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। ফলে পীরগাছা উপজেলায় আইএপিপি ও এনএটিপি প্রকল্পের কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। পীরগাছা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান চৌধুরী বলেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিষয়টি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করেন। তারাই অর্থের বিপরীতে মালামাল সরবরাহ করে। আমরা সেগুলো শুধু বিতরণ করি। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ.ম আশরাফ আলী জানান, এ ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন