মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

রূপগঞ্জে সরকারি সম্পত্তি দখল করে ছাত্রলীগ নেতার মার্কেট নির্মাণ

প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাব বাজার এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান ভূইয়া ও তার লোকজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক কোটি টাকা মূল্যের জমি জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণ সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান ও তার লোকজন এ মার্কেট নির্মাণ করেছেন। জবরদখলের ভিন্ন কৌশল হিসেবে ছাত্রলীগের জেলা শাখার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে এ মার্কেট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষি সেচের সুবিধার্থে এনএনআইপি ব্লক এ/১-এর নারায়ণগঞ্জ নরসিংদী সেচ প্রকল্পের আওতায় রূপগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি রয়েছে। এসব জমির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি এসব জমি স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী জবরদখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো ) কৃষি সেচ কাজের ক্যানেল মেরামতের সুবিধার্থে কিছু জমি সরকারিভাবে লিজ নেয়া হয়েছিল। উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাব বাজার এলাকায় সরকারি ১৫ শতাংশ জমি থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ ক্যানেলের কাজে মাটি কেটে নিয়ে ক্যানেল মেরামত করা হচ্ছে। সেচ প্রকল্পের জমিটিকে (পিট বলা হয়) যা ক্যানেল মেরামত কাজে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এ জমিটি জবরদখল করে স্থানীয় প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান ভূইয়া ও তার লোকজন মার্কেট নির্মাণ করেছেন। জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হলে দখলের ভিন্ন কৌশল হিসেবে ছাত্রলীগের জেলা শাখার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে মার্কেট নির্মাণ কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করেছেন। তবে, মার্কেট নির্মাণের পর সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নাজমুলসহ তার বাহিনীকে সরকারি জমিতে মার্কেট নির্মাণ করতে নিষেধ করা হলেও তা তারা মানেননি। এছাড়া সরকারি জমি জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হলেও এ পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো প্রকার মাথাব্যথা দেখা যায়নি। একদিন লোক দেখানো পরিদর্শন করে গেছেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সজিব বলেন, আমার জানা মতে কোনো জেলা ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয় উপজেলায় করা যায় না। এব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান ভূইয়া বলেন, এ জমিটি আমার বাপ-দাদার তালুকদারী সম্পত্তি আমি আমার চাচাতো ভাইদের কাছ থেকে সাত শতাংশ জমি কিনে নিয়েছি। সরকারি জমি জবরদখলের বিষয়টি সঠিক নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরফান মিয়া জানান, সরকারি জমি জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ এনে তিনি নিজে বাদী হয়ে গত ১১ মে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এখন পর্যন্ত থানা পুলিশ মামলাটি রুজু করেননি। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, অভিযোগ দিয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের অবহিত করার পর তারা তদন্ত করে গেছেন। পরে জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণ সম্পন্ন করার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বরাবর চিঠি পাঠানো হবে মার্কেট উচ্ছেদ করার জন্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন