আফতাব চৌধুরী
পানি পরিবেশের অন্যতম প্রধান উপাদান। পানি না থাকলে পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হতো না। পানির বুকেই জীবনের উদ্ভব হয়েছিল। পৃথিবীতে মানুষ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ ও উদ্ভিদের দেহের শতকরা ৬০-৯৫ অংশ পানি। জীবদেহ থেকে এ পানি বাষ্পাকারে অথবা মল-মূত্র ও ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। এ ঘাটতি পূরণের জন্য জীবের প্রতিদিন প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়, তাছাড়া শরীরের গঠন, বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়, পানি ছাড়া জীবনের অস্তিত্ব রক্ষা সম্ভব নয়। পানির কোন বিকল্প নেই। পানির আরেক নাম তাই জীবন।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে আমরা শক্তির উৎস হিসেবে ব্যাপক হারে কয়লা ও পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করছি। তার আগে মানব সভ্যতার ৯৯.৯ ভাগ কেটেছে কয়লা ও পেট্রোলিয়াম ছাড়াই। বর্তমান শতাব্দীতে পেট্রোলিয়াম এবং তার কয়েক শতাব্দী পরে কয়লার ভা-ার শেষ হয়ে যাবে। তখন মানব সভ্যতার অনেক পরিবর্তন ঘটবে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি দফতরের সমীক্ষায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে পৃথিবীর সীমিত ব্যবহার যোগ্য পানি যে ক্রমবর্ধমান হারে নিঃশেষিত হচ্ছে এবং শোচনীয়ভাবে দূষিত হচ্ছে তার ফলে, অদূর ভবিষ্যতে একদিন শুধু পানির অভাবে পৃথিবীর পানিভাগে মানুষ সমেত অন্যান্য জীবপ্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। পৃথিবীর পানির সমস্যা খাদ্য ও জনসংখ্যার সমস্যার চেয়ে গুরুতর। পানি দুষ্প্রাপ্য হলে এবং খাদ্যের ফলন বা বৃদ্ধি না হলে মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে না।
পৃথিবীর মোট পানির পরিমাণ প্রায় ১৪০ কোটি ঘন কিলোমিটার। এ বিপুল পানি ভা-ারের শতকরা ৯৭ ভাগ সমুদ্রের মধ্যে আবদ্ধ। সমুদ্রের গড় গভীরতা চার কিলোমিটার। এ সমুদ্র গহ্বরগুলো বুজিয়ে যদি ভূ-পৃষ্ঠের সমতলে আনা যেত, তাহলে ভূ-পৃষ্ঠকে পুরোপুরি পানিমগ্ন করে আড়াই কিলোমিটার গভীরতা সম্পন্ন একটি পানিস্তর সৃষ্টি হতো। সমুদ্রের পানিতে অতিরিক্ত লবণ থাকায় পৃথিবীর পানি ভা-ারের ৯৭ শতাংশ মানুষের পক্ষে ব্যবহার্য নয়। বাকি তিন শতাংশ পানির মধ্যে ২.৩১ শতাংশ উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে তুষার স্তুূপে বন্দি।
মানুষের ব্যবহার্য পানির পরিমাণ পৃথিবীর মোট পানি ভা-ারের মাত্র শতকরা ০.৬৯ ভাগ। এরমধ্যে ০.৬৬ ভাগ ভূ-গর্ভের পানি। হ্রদ ও পুকুরে আছে ০.০১ শতাংশ। নদীতে আছে ০.০০০৩ শতাংশ। জলীয় বাষ্পরূপে আছে ০.০০১ শতাংশ। উদ্ভিদ, প্রাণী ও রাসায়নিক দ্রব্যে আবদ্ধ আছে ০.০১৮৭ শতাংশ। এ পানি পৃথিবীর সর্বত্র সমানভাবে পাওয়া যায় না। পানির এ চিরকালীন অনিশ্চয়তার মধ্যে স্থলের জীবজগৎ আশ্চর্য নৈপুণ্যের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে কোটি কোটি বছর ধরে টিকে আছে।
ভূ-পৃষ্ঠের মোট এলাকায় প্রায় ৭১ শতাংশ সাগর ও মহাসাগরগুলোর অন্তর্গত। বাকি মাত্র ২৯ শতাংশ রয়েছে স্থলভাগ। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে এ স্থলভাগের আধিক্য বেশি দেখা যায়, দক্ষিণ গোলার্ধের অধিকাংশ এলাকা সমুদ্রের দখলে। সমুদ্রের বিশাল আয়তনের শতকরা ৯৬.৫ ভাগ অন্তর্গত মাত্র তিনটি মহাসাগরের মধ্যে। এগুলো হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর।
পানি নিখিল বিশ্বের এক পরম তাৎপর্যময় রাসায়নিক যৌগ। এটি অপেক্ষাকৃত অতি সরল অণু-দু’টি হাইড্রোজেনের পরমাণু এবং একটি অক্সিজেনের পরমাণু নিয়ে গঠিত। পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় থাকে এবং এক বিশাল সংখ্যক রাসায়নিক যৌগকে দ্রবীভূত করার ক্ষমতা রাখে।
পানিতে বায়ুম-লের অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড দ্রবীভূত হয়, তাই সমুদ্র ও অন্যান্য জলাশয়ে জলজ প্রাণী ও শৈবালদের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। পানিতে দ্রবীভূত কার্বন-ডাই-অক্সাইড কার্বনেট ও বাই কার্বনেটরূপে সমুদ্রতলে সঞ্চিত হয়। বায়ুম-লে যত কার্বন-ডাই-অক্সাইড আছে তার প্রায় ৫০ গুণ বেশি বাই কার্বনেট খনিজরূপে সমুদ্রতলে জমা আছে। এ বাই কার্বনেট বায়ুম-লের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত করে।
পানি সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বে পৌঁছায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাই উত্তর ও দক্ষিণ মেরুঅঞ্চলে বিশাল ভাসমান হিমশৈল্যের তলায় পানিতে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তরল অবস্থায় পাওয়া যায়। এ রকম পরিবেশে এক বিশাল সংখ্যক জলজ প্রাণী ও জলজ শৈবাল বেঁচে থাকে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের তুন্দ্রা অঞ্চলে।
যখন একমাত্র পানির বাষ্পীভবন ঘটে তখন ৬০০ ক্যালরি লীন তাপ (লেটেন্ট হিট) পরিবেশ থেকে শোষিত হয়, পরিবেশ শীতল হয়। উদ্ভিদের প্রস্বেদন ক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ পানির বাষ্পীভবন ঘটে, তাই গাছের তলায় গরম, রৌদ্রোজ্জ্বল দিনেও ঠা-া, আর্দ্র বাতাসের স্পর্শ অনুভব করা যায়। এ জলীয় বাষ্প ঊর্ধ্বাকাশে উঠে মেঘের সৃষ্টি করে এবং বাতাসে ভাসমান ধূলিকণিকার শীতল গাত্রের স্পর্শে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিধারারূপে ভূ-পৃষ্ঠে ঝরে পড়ে।
ভূগর্ভস্থ জলধার, নদ-নদী-সরোবরে পানি নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকে। উদ্ভিদের প্রস্বেদন ক্রিয়ায় এবং মুক্ত পানিতল থেকে সূর্যের তাপে যে পরিমাণ পানি বাষ্প হয়ে বাতাসে মিশে তার প্রায় সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়ে ফিরে আসে। সমুদ্রের পানি মেঘ ও বৃষ্টিপাতের ফলে যতটা স্থলভাগে ফিরে যায় প্রায় ততটাই নদ-নদী মারফত ফেরত আসে সমুদ্রে। পরিবেশের পানিচক্রের মোট পানি ধারণ ও বহনের পরিমাণ মোটামুটি একই থাকে।
স্থলভাগের পানির অভাব সবসময় ছিল। অথচ প্রত্যেকটি স্থলচর জীবের প্রচুর পানির প্রয়োজন হয় নানা শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য। তাই প্রত্যেকটি স্থলবাসী প্রাণী অল্প পানিতে কাজ চালাবার জন্য নানা অঙ্গের বিস্ময়কর ক্রমবিকাশ ঘটিয়েছে। মেরুদ-ী প্রাণীদের কিডনি, অমেরুদ-ী প্রাণীদের বিশেষ কোন কৌশল এবং মরুঅঞ্চলের উদ্ভিদ ক্যকটাসদের পানি সঞ্চয়ের বিশেষ কৌশল ইত্যাদি সাক্ষ্য দেয় কিভাবে অতি অল্প পানিতে জীবনধারণ করা যায়। মানুষ প্রতিদিন ২ লিটারের মতো পানি পান করে। মল, মূত্র, ঘর্মের মাধ্যমে প্রতিদিন ২ লিটারের মতো পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শারীরবৃত্তিয় কাজে মানুষের প্রতিদিন ১৮০ লিটারের মতো পানির প্রয়োজন হয়। মানুষ প্রতিদিন এ দুই লিটার পানি কিডনির সাহায্যে বারবার শোধন করে ব্যবহার করে ১৮০ লিটারের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। স্থলচর প্রাণী ও উদ্ভিদের পানি সম্পর্কে এ মিতব্যয়িতা বিশেষ অর্থবোধক। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে কৃষিতে সেচব্যবস্থায় ৮৭ শতাংশ, শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৮ শতাংশ, গৃহস্থালির কাজে ৪ শতাংশ ও পশুপালনে ১ শতাংশ হারে পানি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রকৃতিতে স্থলচর জীবেরা যেখানে অল্প পানিতে কাজ চালিয়ে নেবার জন্য নানা ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে, দূষিত পানির পরিশোধন এবং পুনঃ পুনঃ ব্যবহারের জন্য কিডনি প্রভৃতি নানা বিস্ময়কর অঙ্গের ক্রমবিকাশ ঘটিয়েছে, মানুষ সেখানে যথেচ্ছ পরিমাণে পানির অপচয় ও দূষণ ঘটিয়ে চলেছে। দূষিত পানির পরিশোধন ও পুনর্ব্যবহারের জন্য কোনও অবশ্য পালনীয় সার্থক ব্যবস্থা মানুষ আজ অবধি তৈরি করে উঠতে পারেনি।
কাগজের কলে যখন এক টন মাত্র কাগজ তৈরি হয় তখন ২৫০ টন বিশুদ্ধ পানি খরচ হয়। এ পানি যখন কারখানা থেকে পরিত্যক্ত হয় তা অতি দূষিত পানি যা নিজের আয়তনের ১০ থেকে ১০০ গুণ বেশি নদীর বিশুদ্ধ পানিকে দূষিত করার ক্ষমতা রাখে। মোটরগাড়ির কারখানায় যখন একটি মাত্র গাড়ি তৈরি হয় তখন বিভিন্ন পর্যায়ে গড়ে ৪০ হাজার গ্যালন পানির খরচ হয় এবং কারখানায় পরিত্যক্ত দূষিত পানি পরিবেশকে দূষিত করে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।
পৃথিবীতে ব্যবহার্য পানির পরিমাণ মোট পানির শতকরা ০.৬৯ ভাগ মাত্র, যার মধ্যে শতকরা ০.৬৬ ভাগ আছে ভূ-গর্ভের মধ্যে আবদ্ধ। বাংলাদেশ একটি জনবহুল কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিকার্যে সেচ ব্যবস্থায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পানির ব্যবহার হয়। বাংলাদেশ যত পানি ব্যবহৃত তার শতকরা ৮৭ ভাগ কৃষিকার্যে সেচের জন্য ব্যবহৃত হয়। এখানে পানির সবচেয়ে বেশি অপচয় ও দূষণ ঘটে। সেচের জন্য যত পানি ব্যবহৃত হয় তার শতকরা ২০ ভাগ মাত্র উদ্ভিদ ব্যবহার করে; বাকি অংশের অপচয় ঘটে-যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাটি, সার ও অন্যান্য পদার্থসহ নদী-নালায় জমে দূষণ সৃষ্টি করে।
বিশ্বের অন্যান্য সাগর-মহাসাগরের মত বঙ্গোপসাগরও দূষিত হচ্ছে একই নিয়মে। চুইয়ে পড়া তেল, রাসায়নিক পদার্থ, জাহাজের আবর্জনা ইত্যাদি ছাড়াও স্পিলেজ পানি শিল্প ও পৌর গৃহস্থালী বর্জ্য ও বস্তুকণার দ্বারা দূষিত হচ্ছে সাগরের পানি। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে বিপল সংখ্যক জাহাজ থেকে তেল ও অন্যান্য মালামাল খালাস করা হয়। চুয়ে পড়া তেল, বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য এবং কলকারখানা থেকে বেরিয়ে আসা তরল বর্জ্য নদী, সাগরে পড়ে প্রচুর ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে সমুদ্রের পানিতে রয়েছে প্রায় ৫০০ প্রজাতির মাছ ২২ প্রজাতির চিংড়ি, ৬ প্রজাতির লবস্টার, ৪ প্রজাতির অয়েস্টার, ২ প্রজাতির সবুজ ঝিনুক। রয়েছে স্কুইড ও কাটলফিস, কাকড়া, কাছিম ও নানা প্রজাতির শামুক ও ঝিনুক। এছাড়া রয়েছে শৈবাল ও স্থল ভাগের জমির চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি উৎপাদনশীলতা।
আমাদের এ দেশ নদীমাতৃক। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন কারণে দেশের নদ-নদী এবং দক্ষিণাংশের বঙ্গোপসাগরে পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে চলেছে। এর ফলে দূষণমুক্ত পানি সংগ্রহ করা একটা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্য। এদিকে এ মুহূর্তে পানিতে আর্সেনিক দূষণ যে দেশের মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের অধীনে বিভিন্ন সংস্থা, আমাদের সরকার, বেসরকারি সংস্থাগুলো অবিরাম কাজ করে চলেছে। আর্সেনিক এবং স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং আর্সেনিকের বিষক্রিয়া বিকল্প পানি প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ইত্যাদি সব সময় গুরুতের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে মোট জমির প্রায় অধিক অংশ চাষের জমি সেচব্যবস্থার অন্তর্গত। বাকি জমিতে বৃষ্টির পানি এবং নলকূপের সাহায্যে তোলা ভূ-গর্ভের পানির উপর নির্ভর করে চাষবাস করা হয়। উচ্চ ফলনশীল শস্যগুলো সারা বছর ধরে চাষ করা চলে, তাই শীতকালে ও গ্রীষ্মকালে কৃষিক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে ভূ-গর্ভের পানি ব্যবহৃত হয়। কলকারখানা এবং আবাসন প্রকল্পগুলোতে বিপুল পরিমাণে ভূ-গর্ভের পানি ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের বহু স্থানে ভূ-গর্ভের পানিতল আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে এবং বহু স্থানে নলকূপের পানিতে নানা দূষিত, অতি বিষাক্ত পদার্থ উঠে আসছে। দেশের উত্তর দক্ষিণাঞ্চল ও রাজশাহী অঞ্চলের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নলকূপের পানিতে আর্সেনিক উঠে আসছে ক্ষতিকর মাত্রায়।
বিভিন্ন শিল্প ও কলকারখানা থেকে বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থ অতি বিপুল পরিমাণে নির্গত হয়ে পরিবেশকে দূষিত করছে, পরিবেশের পানি, বাতাস ও মাটির সঙ্গে মিশে নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে। এ সমস্ত দূষিত বর্জ্য পদার্থের একটি বড় অংশ নদীর পানিকে দূষিত করে, তারপর সে পানি নদী থেকে সমুদ্রে এসে পড়লে সমুদ্রের পানিকেও দূষিত করে। সমুদ্রের বিশাল পানিভা-ার আজ মানুষের হাতে নানাভাবে কলুষিত হচ্ছে। সমুদ্রে যে সমস্ত জাহাজ চলাচল করে তা থেকে প্রচুর বর্জ্য পদার্থ এবং তৈলবাহী জাহাজের তেল, সমুদ্রে মাছ ধরার সময় পরিত্যক্ত নাইলনের জাল এবং উপকূলবর্তী শহর ও শিল্পাঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ জৈব ও অজৈব বর্জ্য পদার্থ সমুদ্রের পানিকে দূষিত করছে এবং সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবন বিপন্ন করছে।
আমরা আশাবাদী, আমাদের হতাশ হলে চলবে না। সামুদ্রিক পরিবেশের এ সংকটময় মুহূর্তে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নদী, সাগর, মহাসাগরকে দূষণমুক্ত করতে ও প্রকৃতি প্রদত্ত বিশাল সামুদ্রিক সম্পদের ভা-ারকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে। সকল পর্যায়ের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পানিকে দূষণমুক্ত করতে সক্ষম হবো। যে কোন জাতীয় সমস্যা সমাধানে দেশপ্রেমিক সকল নাগরিকের আন্তরিক উদ্যোগ ও সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলে এগিয়ে আসলে এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান সম্ভব নয়।
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন