গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৌনে ৪ কিলোমিটার ক্যাচমেন্ট এলাকা নিয়ে স্থাপিত আসকুর আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ৬ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কর্মরত শিক্ষকরা। শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ বিদ্যালয়টি অবিলম্বে এমপিওভুক্তসহ জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছেন। উপজেলার ২নং কাটাবাড়ী ইউনিয়নের বিদ্যালয়বিহীন আসকুর গ্রামে ২০১০ স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতায় আসকুর আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। পাঠদান স্বীকৃতি নিয়ে ১ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শুরু হয় পাঠদান কার্যক্রম। ২৩/০৩/২০১৫ তারিখে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ আসকুর আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয়করণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেন। এর প্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-১ অধিশাখা ২৯/০৩/২০১৬ তারিখে জাতীয়করণের বিষয়ে জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে মতামতসহ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক গাইবান্ধাকে পত্র দেয়। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ সংক্রান্ত জেলা পর্যায়ের বাছাই কমিটির সভাপতি ও তৎকালীন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে ০৫/০৫/২০১৫ তারিখের সভায় আসকুর আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য সুপারিশ করা হয়। ০৭/০৫/২০১৫ তারিখে বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একেএম অমিরুল ইসলাম কমিটির সুপারিশসহ মতামত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এরপর এক বছর অতিবাহিত হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ২০৭ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। সেমিপাকা টিনশেড ঘরের এই বিদ্যালয়ে ৩টি শ্রেণীকক্ষ, ১টি অফিস রুম, ১টি ল্যাট্রিন ১টি টিউবওয়েল রয়েছে। আসকুর, বেড়াবুজরুক, মোলামপুকুর দীঘির পাড় নিয়ে গঠিত আসকুর আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার উত্তরে ফেরুসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব সাড়ে ৩ কিলোমিটার, দক্ষিণে কৌচা কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার, পূর্বে বিশুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব সাড়ে ৩ কিলোমিটার ও পশ্চিমে চকমানিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কর্মরত আছেন মো. আতিকুর রহমান প্রধান শিক্ষক, মো. এনামুল হক সহকারী শিক্ষক, মোছা. মরিয়ম খাতুন সহকারী শিক্ষিকা, মোছা. মাহমুদা বেগম সহকারী শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষক জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার একাধিক কর্মকর্তা এই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করলেও পাঠদান স্বীকৃতি ছাড়া সরকারি কোনো অনুদান পায়নি। বেতন-ভাতা না পেলেও পাঠদানে কোনো ঘাটতি রাখেনি শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। তাদের পাঠদানে শিক্ষার্থীরাও খুশি এবং নিয়মিত বিদ্যালয়ে এসে পাঠদান গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা। তাই এ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ বিদ্যালয়টি অবিলম্বে এমপিওভুক্তসহ জাতীয়করণের দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন