একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন রোমানা ইসলাম স্বর্ণা। নিজেকে কখনো মডেল, কখনো অভিনেত্রী পরিচয় দিতেন তিনি। খুলতেন ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক আইডি। আপলোড করতেন আপত্তিকর সব ছবি। এরপর প্রবাসীদের টার্গেট করে ‘ফ্রেন্ড’ বানিয়ে গড়ে তুলতেন প্রেমের সম্পর্ক। তারপর কখনো স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, আবার কখনো স্বামীহীন সংসারে আর্থিক অনটনের কথা বলে প্রবাসী ঐসব প্রেমিকদের কাছ থেকে নিতেন টাকা। দেশে ফিরলে তাদের সঙ্গে দেখা করতেন। একান্তে সময় কাটিয়ে গোপনে ছবি তুলতেন। পরে সেই অন্তরঙ্গ ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে করতেন বিয়ে। প্রতারিতদের দাবি, ২৭ জনের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে বিয়ে করে রোমানা হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। পুরো পরিবারের সবাই এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।
ঠিক একইভাবে কখনো ফ্ল্যাট কেনা, আবার কখনো গাড়ি কেনার নাম করে রোমানা সউদী প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েলের কাছ থেকে এক বছরে বিভিন্ন সময়ে নেন আড়াই কোটি টাকা। স্বর্ণার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা ঠুকেন কামরুল হাসান। মামলার বাকি দুই আসামি হলেন, রোমানার মা আশরাফি আক্তার শেলী ও তার ছেলে আন্নাফি ইউসুফ ওরফে আনান। তার মামলার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ার সি ব্লকের একটি বাড়ি থেকে স্বর্ণাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। অভিযোগ উঠেছে, অভিনেত্রী স্বর্ণার প্রেমের ফাঁদে পড়ে সউদী প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েলই সর্বস্বান্ত হননি। এখন পর্যন্ত ২৭ জনের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে বিয়ে করে স্বর্ণা হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
২৭ জনের বিষয়ে তথ্য না দিলেও কামরুল ইসলামের প্রতারিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ডিএমপির ডিসি হারুন অর রশীদ বলেন, রোমানা স্বর্ণার বিরুদ্ধে আমরা এমন প্রতারণার অনেক অভিযোগ পেয়েছি। অনেককে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সর্বস্বান্ত করেছে রোমানা। টেলিফোনে প্রতারিতরা এসব অভিযোগ করছেন। আমরা তাদের থানায় আসতে বলেছি।
জানা গেছে, এই পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বিপরীত লিঙ্গের সাথে একই প্রক্রিয়ার প্রেম ও বিয়ের সম্পর্কের অভিনয় করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে স্বর্ণা অভিনীত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। এছাড়া বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। স্বর্ণা অভিনীত প্রথম সিনেমা মুক্তির তিন বছর পর সউদী প্রবাসী কামরুল হাসানের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। ২০১৯ সালের মার্চে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর কামরুল হাসান সউদী আরব চলে যাওয়ার পর নানা অজুহাতে কামরুলের কাছ থেকে মোট এক কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এ অভিনেত্রী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন