নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী হাট ঢেলাপীরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে হাটে। হাটের দিন ঢেলাপীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু-ছাগল উঠতে দেখা গেছে হাটে। এবার ভারতীয় গরুর অভাব থাকলেও দেশি-গরু, ছাগল, ভেড়াসহ পশুর সংখ্যা পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকলেও দাম একটু বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের গত বছরের তুলনায়।
নীলফামারী জেলার সর্ববৃহৎ পশুর হাট ঢেলাপীর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সাইজের গরু ও ছাগল বাজারে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্রেতারা নিয়ে এসেছেন গরু-ছাগল। নসিমন, ট্রাক ভরে আসছে গরু। একটি মিডিয়াম সাইজের ষাড়ের এবার দাম হাঁকা হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা যেটা গত বছরের তুলনায় ৫-৭ হাজার বেশি। কুড়িগ্রাম থেকে নিয়ে আসা আজাদুর রহমান তার ষাঁড়ের দাম রেখেছেন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা যেটা ঢেলাপীর হাটে উঠা এই পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি দামের গরু এটি। ক্রেতা আবুল কালাম, আমিনুর, সহিদার রহমান জানান, নীলফামারীর জেলার সবচেয়ে বড় এই হাটে এ বছর গরুর দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও গত বছরের তুলনায় বেশি আছে। সে তুলনায় হাটে ক্রেতা এখন তেমন নেই। পশু ব্যবসায়ী আকবর আলী, কালাম জানান, পশুর আমদানি খুব কম বলতে গেলে পার্শ¦বর্তী দেশ থেকে গরু আসছে না সে অনুযায়ী হাটে শুধুমাত্র দেশি গরু থাকায় বিক্রি হচ্ছে না। লালমনির হাট থেকে ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন গরু ব্যবসায়ী আমজাদ, ২টি বিক্রি করতে পারলেও তিনি আশাবাদী পরবর্তী হাটে সব বিক্রি করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, কোরবানীকারীদের ৮৫ ভাগ ব্যক্তিই ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে কোরবানীর গরু কিনতে চান এবার। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে জানান, আগামী হাটগুলোতে হাটে বিক্রি বাড়বে। দিনাজপুরের দশ মাইলের গরু ব্যবসায়ী লালন জানান, ছোট-বড় ১৮টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। এর মধ্যে দুটি গরু বিক্রি করেছেন ৪২ হাজার ও বায়ান্ন হাজার টাকায়। গরু হাটের ন্যায় পার্শ¦বর্তী ছাগলের হাটেও ক্রেতাদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। একটি মেডিয়াম সাইজের ছাগল ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার মধ্যে দাম উঠলেও সবচেয়ে দামি ছাগলের দাম উঠেছে ৩২ হাজার টাকা যেটা বেলাইচন্ডি থেকে নিয়ে এসেছেন মোকছেদ ইসলাম। হাটে ক্রেতাদের তেমন ভিড় না থাকলেও মঙ্গলবার ও শুক্রবার আরো দুটি হাট থাকায় তখন ভিড় হবে বলে আশাবাদী বিক্রেতাগণ। তবে এবার ঢেলাপীর হাটে গত বছরের তুলনায় গরু ছাগল বিক্রি রশিদ বাবদ অর্থ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত বছর গরু প্রতি রশিদ মূল্য ২৫০ আর ছাগলের ১০০ টাকা হলেও এবার নেয়া হচ্ছে গরু প্রতি ৩৫০ টাকা আর ছাগল প্রতি ১৩০ টাকা। কারণ জানতে চাইলে ইজারাদার কর্মী জাহেদুল জানান, সব কিছুর দাম বেড়েছে এটার একটু বাড়লে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এদিকে ক্রেতাদের সুবিধার্থে হাট ইজারাদারের পক্ষে ভ্যাকসিন দিয়ে গরু মোটাজাত, অসুস্থ ও গর্ভবতি গরু চেনার জন্য হাটে পশু চিকিৎসক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন