আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে
মীরসরাই উপজেলার মহামায়ার পানি ছেড়ে দেয়াতে মহামায়ার পশ্চিমাঞ্চল দুর্গাপুর ও কাটাছরা ইউনিয়নে শত শত একর ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কৃষকের মাথায় হাত। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, একশ্রেণির মাছ চোরচক্র মহামায়া সেচ প্রকল্পের রেগুলেটর হ্যান্ডেল নিজেরাই ঘুরিয়ে পানি ছেড়ে দেয়। আর শুধুমাত্র মাছ চুরির জন্যই পাউবোর কতিপয় কর্মচারীদের যোগসাজোসে এই পানি ছেড়ে দেয় চোরচক্র। এবার গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে লেকের পানি একই ভাবে কোন প্রকার নিয়ম-নীতিহীনভাবে চোরচক্র কর্তৃক ছেড়ে দেয়ায় কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলি জমি, সবজি ক্ষেতসহ প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়ি ও পানিতে ডুবে যাচ্ছে। সরেজমিন দুর্গাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ফসলি জমিতে পানির নিচে ডুবে আছে ধান সবজিসহ নানা ধরনের ফসল। পুর্ব কাটাছরা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ মহামায়া কর্তৃপক্ষ মাছ ধরার জন্য মহামায়া স্লুইস গেইট খুলে দেয় ফলে আমাদের জমি পানিতে ডুবে যায়। কৃষকদের মধ্যে আবু, মোশারফ, রশিদ আহম্মেদ, জহরুল হক, হুদা মিয়া, আলম, জামাল উল্লাহ, আব্দুল মান্নান, ইউসুফ, জসিম, আহম্মদ সোবাহান, নবী, কবির, মেশকাত, নুর হোসেন, রফিকুর জামান, আবুল কোম্পানিরসহ বিভিন্ন কৃষক তীব্র খোভ-দুঃখে এ প্রতিবেদককে তাদের দুর্দশা ও দুরবস্থার কথা জানান। এ ব্যাপারে ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান বিপ্লব এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় পানির লেয়ার কমে গেলে পাউবো কর্মচারীরাই পানি কমিয়ে আনার জন্য ছেড়ে দেয়। কিন্তু তবুও কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আমি ক্ষতিয়ে দেখবো। আবার এই বিষয়ে বন বিভাগের মীরসরাই রেঞ্জ এর রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, মাছ চুরির অভিযোগের ও সত্যতার খোঁজ আমরা পেয়েছি। পাউবোর গাফিলতির কথা ও তিনি উল্লেখ করে এই বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পাউবোর বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার গুরুত্বআরোপ করেন তিনি। এই বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম বলেন, উপজেলার মহামায়া সেচ প্রকল্প নির্ভর ৯নং মীরসরাই, ৮নং দুর্গাপুর ও ৭নং কাটাছরা ইউনিয়নের অন্তত দেড় হাজার হেক্টর রোপা আমন নিচু জমিতে রয়েছে। লেকের পানি ব্যবস্থাপনা বিহীন ছেড়ে দেয়া হলে কৃষকরা এখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে পাউবোর কাছে শীঘ্রই পত্র প্রদান সহ অফিসিয়াল উদ্যোগ নিবেন বলে জানান। এদিকে সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি মঈনউদ্দিন আহমদ চৌধুরী সেলিম বলেন ফেনী নদী, মহামায়া সেচ প্রকল্প, অন্তত ১৫-২০টি স্লুইস গেট এবং উপকূলীয় নানা স্লুইস গেটসহ নানা কারণে পাউবো এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের মীরসরাইতে দপ্তর থাকা বাঞ্চনীয়। এছাড়া মাঠে কোন কর্মকর্তাও না থাকায় কোন বিষয়েই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই পাউবোর। এখানে পাউবোর একটি দপ্তর এখন সময়ের দাবি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন