মাকে নিজের কাছে নিতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বোনের। অতপর পুলিশ হেফাজতে সারারাত থানায় কাটালেন বৃদ্ধা। পরের দিন আদালত ঘুরে বিচারকের নির্দেশে ছেলের কাছে নয়, মেয়ের কাছেই গেলেন বিধবা বৃদ্ধা রাহেলা বেগম (৮৪)। বিধবা বৃদ্ধা জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার কড়–ইচূড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলছিয়া গ্রামের মৃত উসমান গণির স্ত্রী।
জানা যায়, বৃদ্ধা রাহেলা বেগমের এক ছেলে ও চার মেয়ে। বেঁচে নেই দ্বিতীয় মেয়ে মনোয়ারা বেগম। স্বামী মারা যাওয়ার পর রাহেলা বেগম নিজ বাড়িতে বড় ছেলে আলতাফুর রহমানের কাছে থাকা শুরু করেন। তবে হঠাৎ মেয়ে আনোয়ারা বেগম অভিযোগ তুলেন, আলতাফুর রহমানের মানসিক নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মা। সেই অভিযোগসহ মায়ের সুচিকিৎসার জন্য আনোয়ারা তার জিম্মায় দেয়ার জন্য গত বুধবার সাধারণ ডায়েরি করেন থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে পুলিশ পূর্ব নলছিয়া গ্রামে যান বৃদ্ধা রাহেলাকে উদ্ধার করেন।
মাদারগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মাহবুবুল হক জানান, বৃদ্ধার মেয়ে আনোয়ারা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে রাহেলা বেগমকে ছেলের বাড়ি থেকে থানায় আনা হয়। ওসি আরো জানান, তাকে থানায় আনার পর রাতে তার ছেলে আলতাফুর রহমান ও তিন মেয়েকে নিয়ে থানায় বৈঠক হয়েছে। আনোয়ারা তার মাকে তার জিম্মায় চেয়ে আবেদন করলেও বৃদ্ধা রাহেলা তার ছোট মেয়ে আয়শার কাছে যেতে চান। কিন্তু আয়শা বেগম খুবই অস্বচ্ছল। তবে ছেলে আলতাফের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ নেয় মায়ের। ফলে এ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হলে বৃদ্ধা রাহেলাকে আদালতের মাধ্যমে তার তিন মেয়ের যে কোনো একজনের জিম্মায় দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার বৃদ্ধা রাহেলাকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার আদেশ চেয়ে জামালপুরের বিচারিক হাকিম মো. সোলায়মান কবীরের আদালতে আবেদন করেন থানার এসআই মো. সুজন মিয়া। বিচারিক হাকিম মো. সোলায়মান কবীর বৃদ্ধা রাহেলা বেগমকে মেয়ে আনোয়ারা বেগমের নিরাপদ হেফাজতে থাকার আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর আনোয়ারা বেগম মাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে যান।
বৃদ্ধা রাহেলার ছেলে আলতাফুর রহমান জানান, তার বৃদ্ধা মা রাহেলা তার বাড়িতে স্বস্তিতেই জীবনযাপন করেছেন। তার প্রতি কোনো অযন্ত অবহেলা করা হয়নি। কিন্তু মায়ের কিছু সম্পত্তির লোভে বোনেরা জোটবব্ধ হয়ে মাদারগঞ্জ থানায় মিথ্যা অভিযোগ করে প্রভাব খাটিয়ে মাকে তার বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন