পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকূলের চারদিকে বাতাসে সোনালী ধানের শিষ দুলছে, দোল খাচ্ছে সোনালী-সবুজের আভায় বোরো ধানের ক্ষেত। কৃষকরা এ মৌসুমে নানা প্রতিক‚লতার মধ্যে বোরো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
জানা যায়, কৃষকরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জমির ধান নিবির পরিচর্যা করে পূর্ণাঙ্গ বড় হওয়ার পর ধানের বাইল খুব ভালোই ছড়াচ্ছে। তবে, কিছু ক্ষেতে পামড়ি, মাজরা, শিশ কাটা, কারেন্ট, সাদাপোকা, কালোপোকায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মাঠে পোকার আক্রমণ রয়েছে, তারপরও ভালো ফলনের আশা করছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে রোপা বোরো ফলন ভালো হওয়ার আশা করছে কৃষকরা। ক্ষেতজুড়ে উকি দিচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সোনালী ধানের শীষ বের হয়ে আসছে। ফসল ঘরে তোলার আশায় কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরণের ছাপ। রোপা বোরো ধান বাম্পার ফলনের সম্ভবনায় কৃষকরা বেশ খুশি।
কৃষি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলার মোট কৃষি জমি ৪০৯৪০ হেক্টর। এ বছর ৪০০০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো পর্যায়ে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম আশা করছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রত্যন্ত গ্রাম-গায়ের কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছে। বাতাসে সোনালী ধানের শিষ দুলছে। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঁঞ্চি ও গাছের ডালের ওপর ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে আছে। সুযোগ বুঝে ধান ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। আবার অনেকে অধিক ধান পাওয়ার আশায় জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছে। তবে, অনেক জায়গায় বোরো চাষ করে পানির কারণে চারা রোদে পুড়ে মারা গেছে। শুধু পানির অভাবে আবার অনেক কৃষকের বোরো ধানের শিষ বের হচ্ছে না। কৃষকের দাবি, যে সব খালগুলো বেদখল হয়ে গেছে, সে খালগুলো উদ্ধার করে খনন করলে পানির সমস্যা সমাধান হবে।
ধুলাসার ইউনিয়নে চরচাপলী গ্রামের কৃষক মো. জমির মিয়া জানান, ভালো মুনাফার আশায় বোরো ধান চাষ করছি। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কৃষকের সরকারি বরাদ্ধকৃত সার, বীজ কৃষকরা পায় না। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যারা আছে তাদের নামে বরাদ্ধ করা হয় সার, বীজ। সুইজ নিয়ন্ত্রণ ব্যাপারে পানি নিয়ে রয়েছে বড় সমস্যা।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা আবদুল মান্নান এ প্রতিবেদককে জানান, আমন ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা এ বছর ব্যাপকভাবে বোরো চাষ করেছে। এখন যদি বৃষ্টি হতো তাহলে কৃষকের পানি নিয়ে যে সমস্যা তা দূর হয়ে যাবে। বোরো ধান খুবই ভালো হয়েছে। কৃষি অফিস কৃষকের পাশে থেকে যথাসম্ভব পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন