শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নীলফামারী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা

নীলফামারী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দীর্ঘদিন ধরে দলিল লেখক সমিতির কয়েকজন নেতা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ মতে, সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দীর্ঘদিন ধরে জমির শ্রেণি পরির্বতন করে জমির মূল্য কম দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। জমি ক্রেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দোলা জমিকে ডাঙ্গা এবং ডাঙ্গা জমিকে বাঁশঝাড়, ভিটা ও ডোবা দেখিয়ে কম খরচে জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। দামি জমিকে কম মূল্যের জমি দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করায় প্রতিদিন সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া রেজিস্ট্রির সময় বিক্রিত জমির ভুয়া মাঠ পরচা, খাজনার রসিদ, খারিজের কাগজপত্র দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে এসব কাজ করছেন দলিল লেখক সমিতির একটি সিন্ডিকেট। সূত্র মতে, নীলফামারী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ২৯ আগস্ট ৩ একর ১৮ শতকের একটি জমি রেজিস্ট্রি হয়। যার দলিল নং ৬৫৮২। এই জমিটির শ্রেণি অনুযায়ী রেজিস্ট্রি খরচ (রাজস্ব) হয় প্রায় এক কোটি টাকারও উপরে। কিন্তু সিন্ডিকেট চক্রটি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে বাঁশঝাড়, ভিটা, ডোবা ও বাস্তু দেখিয়ে মাত্র ১১ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি করেন। প্রকৃত পক্ষে জমিটি ডাঙ্গা (উঁচু)। একই দিন ৩ একর ৬ দশমিক ১৫ শতকের একটি জমি রেজিস্ট্রি হয়। যার দলিল নং ৬৫৮৩। এই জমিটির শ্রেণি অনুযায়ী রেজিস্ট্রি খরচ (রাজস্ব) হয় প্রায় এক কোটি টাকারও উপরে। কিন্তু জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে বাঁশঝাড়, ভিটা, ডোবা ও বাস্তু দেখিয়ে মাত্র ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকায় রেজিস্ট্রি করা হয়। এছাড়া ২৯ আগস্ট রেজিস্ট্রি হওয়া ৬৬০৩ ও ৬৫৯৪ নং দলিলসহ ১৫টি দলিল একইভাবে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রেজিস্ট্র করা হয়। জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে এভাবে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নীলফামারী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক জানান, ২০১৪ সাল থেকে অদ্যবদি চক্রটি উৎকোচের বিনিময়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে আসছেন। এতে করে সরকার দুই বছরে অন্তত কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারা জানান, শুধুমাত্র ২০১৬ সালের ২৯ আগস্টের রেজিস্ট্রি হওয়া দলিলগুলো বের করে তদন্ত করলেই চক্রটির অনিয়ম ধরা পড়বে। এ ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি হওয়ার সময় প্রতি দলিলে দলিল লেখক সমিতির নামে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়। মাস শেষে এই টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেন সমিতির নেতারা। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি তোজাম্মেল হক অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের কোন সিন্ডিকেট নেই। এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার মনিরুজ্জামান বলেন, তিনি যোগদানের পর থেকে সরকারি রাজস্ব যাতে ফাঁকি না যায় সে ব্যাপারে তিনি সতর্ক রয়েছেন। দলিল লেখক সমিতির নেতাদের চাপের কারণে অনেক সময় শ্রেণি পরিবর্তন করে জমি রেজিস্ট্রি করা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একসঙ্গে বসবাস করতে হলে অনেক কিছু মেনে চলতে হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন