মোহাম্মদ আবদুল গফুর
বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কথায় কথায় কারণে-অকারণে যেভাবে ঝগড়া-বিবাদ হতে দেখা যায় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এমনটি কল্পনা করাও সম্ভব ছিল না। সকলেই জানেন, বাংলাদেশের এ প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের প্রথমটি অর্থাৎ আওয়ামী লীগের জন্ম পাকিস্তান আমলে ১৯৪৯ সালে। দ্বিতীয়টি অর্থাৎ বিএনপির জন্ম বাংলাদেশ আমলে ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরে। যে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের জন্ম হয় তার নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলন। অর্থাৎ ১৯০৫ সালে নবাব সলিমুল্লাহর উগ্যোগে ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ নামে যে রাজনৈতিক সংগঠনটির জন্ম হয় তার একাংশই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে আবির্ভূত হয়। নতুন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠার পক্ষে সেদিন যুক্তি দেয়া হয়েছিল মুসলিম লীগ আম জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে পকেট লীগে পরিণত হয়েছে। তাই আম জনগণের সাথে দলের সম্পর্ক পুনঃ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আম জনগণের মুসলিম লীগ অর্থাৎ আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
যে সম্মেলনে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় সেখানে শেখ মুজিবুর রহমান উপস্থিত না থাকলেও তাকে দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। নতুন দলের অন্য কর্মকর্তারা ছিলেনÑ সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সহ-সভাপতি আতাউর রহমান খান ও আবদুস সালাম খান, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, সহ-সম্পাদক খন্দকার মোশতাক আহমদ, ও এ কে এম রফিকুল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ইয়ার মুহম্মদ খান প্রমুখ।
পরবর্তীকালে মওলানা ভাষানী দলত্যাগ করে অন্য দল (ন্যাপ) গঠন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ইন্তেকালের পর ষাটের দশকে শেখ মুজিবুর রহমান দলের মূল নেতৃত্বে উঠে আসেন। এ সময় তিনি ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপন করে পাকিস্তানি রাজনীতিতে পশ্চিম পাকিস্তানিদের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ঘোষণা করেন। এর ফল হয় সুদূরপ্রসারী। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালিরা তাদের আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠেন। অনেকে তাদের পশ্চিমা সহকর্মীদের অপমানজনক ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে চাকরি থেকেই পদত্যাগ করেন। আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. হাসান জামানের ছোট ভাই পাকিস্তান এয়ারফোর্সে চাকরি করত। একদিন তার সাথে দেখা হওয়াতে সে জানাল, পশ্চিমা সহকর্মীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে সে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে এসেছে।
সে সময় শেখ মুজিবুর পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি সদস্যদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়। বিশ্বস্ত সূত্রে শুনেছি, সে সময়ে এক অবাঙালি সহকর্মী শেখ সাহেব সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় জিয়াউর রহমান রীতিমতো তার ওপর চড়াও হন। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি সদস্যদের মধ্যে সে সময় শেখ মুজিবের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ সাহেবের সঙ্গে বহু বাঙালি সামরিক-বেসামরিক অফিসারদের ইচ্ছাকৃতভাবে জড়ানো হয়েছিল। সেই সুবাদে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বাঙালিদের বিরুদ্ধে যে বর্বর অভিযান শুরু করে তার বিরুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমান কর্তৃক জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে যে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা পাঠ করেন তাও ছিল স্বাভাবিক।
এখানে আরও উল্লেখ্য, পাকিস্তÍানের সামরিক-বেসামরিক উভয় পর্যায়ে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে শেখ সাহেব উচ্চকণ্ঠ থাকায় তার প্রতি অধিকাংশ বাঙালি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছিল একটা স্বাভাবিক দুর্বলতা। একইভাবে জিয়াউর রহমান প্রমুখ যেসব অফিসার নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাহসিকতা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন শেখ সাহেবেরও তাদের প্রতি ছিল বিশেষ ¯েœহ দৃষ্টি। এর প্রমাণ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার তথা বঙ্গবন্ধুর সরকারের আমলেই ১৯৭২-এর জুন মাসে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। তাছাড়া জিয়াউর রহমান ১৯৭২-এর ফেব্রুয়ারিতে কর্নেল, ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং ঐ বছরের ১০ অক্টোবর মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। এসবই হয় বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে।
এ বিষয়ে এতসব কথা বলতে হলো এ কারণে যে, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশে বহু দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সুদূরপ্রসারী অবদান রাখলেও বর্তমান সরকার নাকি তার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছে। এ গুজব যদি সত্যি হয় তা হবে চরম দুর্ভাগ্যের কথা। এ কথা সত্য যে, বড় বড় বহু রাজনীতিক বা নেতারাও কখনো কখনো ভুল করে থাকেন। কারণ বড় নেতারাও মানুষ। তারা যেমন ফেরেশতা নন, তেমনি ইবলিসও নন। ফেরেশতারা সাধারণত ভুল করেন না। আর ইবলিস ভুলেও ভালো কাজ করে না। কিন্তু মানুষ যেমন অনেক ভালো কাজ করেন আবার ক্ষণিকের অসাবধানতায় ভুলও করে বসতে পারেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে তার সরকারের আমলে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটিমাত্র সরকারি দল রেখে দেশে সে একদলীয় বাকশালি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়।সেটা ঠিক ছিল না।
ব্যক্তিগতভাবে আমার অবশ্য বিশ্বাস, যে নেতা সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তিনি নিজ বুদ্ধিতে এমন কাজ কখনো করতে পারেন না। এ ব্যাপারে অন্যতম বাকশাল নেতা কমরেড মণি সিংহের বাকশালের সমর্থনে প্রদত্ত বক্তব্য থেকে মনে হয়, গণতন্ত্রঘাতী এ দর্শনের মূল হোতা তিনিই। তিনি (মণি সিংহ) বলেছিলেন, বাকশাল কোনো একাংক নাটক নয়, এ একটা বহু অঙ্কের নাটক। এর শেষ অংকের শেষ দৃশ্য না দেখে এর যথার্থতা অনুধাবন করা সম্ভব হবে না। সম্ভবত তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুকরণে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমেই তিনি বাকশালের চূড়ান্ত রূপ দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
পরবর্তীকালে পঁচাত্তরের দুঃখজনক ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থার অবসান ঘটে। এরপর দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান ঐতিহাসিক অবদান রাখেন। শুধু বহু দলীয় গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেই নয়, ব্যক্তিগতভাবে তার সহজ সরল জীবন ধারা, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতা আনয়নের লক্ষ্যে খাল খনন কর্মসূচি প্রভৃতি আরও বহু কার্যক্রম তাকে দেশের মানুষের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয় করে তোলে। জেনারেল জিয়াউর রহমানের জীবনে তার বিপুল জনপ্রিয়তার প্রমাণ পাওয়া যায় দুবার। জেনারেলদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব দেখা দিলে তিনি ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর সেনাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর পর ৭ নভেম্বর (১৯৭৫) সিপাহি জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চিফ অব স্টাফের পদে প্রত্যাবর্তন করলে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হয়। তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তার আরেক প্রমাণ দেখা যায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে আততায়ীর হাতে তার নিহত হওয়ার পর ঢাকায় তার জানাজায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি থেকে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের এ এক ব্যতিক্রমী ঘটনা, যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাঁর আমলেই দেশে গণতন্ত্রঘাতী একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। পক্ষান্তরে যিনি মূলত মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী একজন সামরিক কর্মকর্তা তার মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আগেই আমরা দেখেছি দেশের দুটি বড় রাজনৈতিক দলের অন্যতম আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন। ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের ধারাবাহিকতায় বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের উদ্যোগে। সেই নিরিখে দেশের এই প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির দীর্ঘ রাজনৈতিক উত্তরাধিকার রয়েছে। পক্ষান্তরে বিএনপির জন্ম ১৯৭৮ সারের ১ সেপ্টেম্বর। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সাংগঠনিক বয়সের তুলনায় বিএনপিকে অবশ্যই শিশু সংগঠন বলতে হয়। তা সত্ত্বেও একাধিকবার অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিএনপি যে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে তারজন্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের কৃতিত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শহীদ জিয়াউর রহমানের সাফল্য থেকে অন্যান্য রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
সেই জিয়াউর রহমানকে একদা স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়েছিল। তার দ্বারা শুধু মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানই গৌরবান্বিত হননি, গৌরবান্বিত হয়েছে স্বাধীনতা পদকও। এক্ষণে সরকার যদি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করে নেয়, তার দ্বারা জিয়াউর রহমানকে ছোট করা সম্ভব হবে না। কারণ যারা জীবনপণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেদিন দেশ স্বাধীন করেন তারা কোনো কিছু পাওয়ার আশায় সেদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেননি। দেশকে হানাদারদের কবল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই সেদিন তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাদের একমাত্র লক্ষ ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সার্থক করে তোলা।
এসব ব্যাপারে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে যথেষ্ট সজাগ ছিলেন তার প্রমাণ তাঁর সরকারের আমলেই জিয়াউর রহমানকে ১৯৭২ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ দেয়া হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর সরকারের আমলেই তাকে ১৯৭২ সালে কর্নেল, ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং ঐ বছরের ১০ অক্টোবর মেজর জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়। সর্বোপরি জিয়াউর রহমানের বড় কৃতিত্ব ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি আওয়ামী লীগের তুলনায় বহু কনিষ্ঠ রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও একাধিক নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে প্রাচীনতম দল আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে সরকার গঠন করতে স্বক্ষম হয়।
দেশবাসীর মনে থাকার কথা, বাংলাদেশ আমলে এক পর্যায়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে বসেন তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দেশবাসীকে অবাক করে দিয়ে সেদিন ওই ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক কর্মকর্তা এরশাদের প্রতি সমর্থন দান করে বসেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, তিনি এটা করেন এ বিবেচনায় যে, ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত হওয়া ওই নির্বাচিত দলটি ছিল আওয়ামীলীগের প্রধান নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। পর্যবেক্ষকগণ জানেন, এর পর দীর্ঘদিন ধরে চলে জেনারেল এরশাদের স্বৈর শাসন।
এরশাদের দীর্ঘ শাসনের অবসানে যখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রশ্ন ওঠে, দুই প্রধান দল একমত হয় তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে। প্রাচীনতম ও সুসংগঠিত দল হিসেবে আওয়ামী লীগই নির্বাচনে জিতবে এ বিশ্বাস থেকে নিজস্ব ভোটকেন্দ্রে ভোটদানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার একপর্যায়ে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমি সব জেলার খবর নিয়েছি, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু হয়েছে।
আপনারা লক্ষ্য রাখবেন কেউ যেন ভোটে হেরে এর মধ্যে আবার কারচুপি আবিষ্কার না করে। পরে নির্বাচনের গণনাকার্য শেষ হলে যখন দেখা গেল আওয়ামী লীগ নয় জিতেছে বিএনপি, তিনি অবলীলাক্রমে বলে ফেললেন নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে।
এসব ঘটনা থেকে সম্ভবত আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার মনে একটি আশঙ্কা দৃঢ়মূল হয়েছে যে, এ সব অনিষ্ঠের মূলে রয়েছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান যদি বিএনপি প্রতিষ্ঠা না করতেন তা হলে আজকে তাকে রাজনৈতিক ময়দানে এতটা হয়রানি সহ্য করতে হতো না। তাই সবখান থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের যত অবদানই থাক, তাকে স্বাধীনতা পদক প্রদান যত যথার্থই হোক তাঁর এ পদক প্রত্যাহার ছাড়া কোনো উপায় নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন