লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় খুলনায় ভ্রাম্যমান আদালত ৫৩ জনকে জরিমানা করে। মাগুরার শ্রীপুরে ৫০ অটোরিকশা আটক করা হয়। শেরপুরে ৪ জনকে জরিমানা করা হয় ও কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ৯ মামলায় ২১,৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এ বিষয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
খুলনা ব্যুরো জানায়, মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে খুলনা মহানগর ও জেলার ৯ উপজেলায় অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল মঙ্গলবার পরিচালিত অভিযানে ৫৩টি মামলায় ৪৫ হাজার তিনশত টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের আহবান জানানো হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয়। খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।
মাগুরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, মাগুরার শ্রীপুরে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সারাদেশে করোনা সংক্রামণ রোধে লকডাউনের অংশ হিসেবে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলাতেও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিন থেকে শুরু করে আজ দ্বিতীয় দিনেও প্রশাসনের কর্মতৎপরতা, জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা, মোবাইল কোর্ট ও অভিযান চলছেই। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়াছিন কবীর, সহকারি কমিশনার (ভুমি) হাছিনা মমতাজ ও শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শুকদেব রায়ের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়াছিন কবীরের নেতৃত্বে শ্রীপুর-মাগুরা সড়কের টেম্পু স্ট্যান্ড ও কুমার নদের ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে প্রায় অর্ধশত যাত্রীবাহী ইজিবাইক ও অটোটেম্পু আটক করা হয়।
শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই শহরের দোকানপাট খোলা ছিল। পরে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে তরিঘরি করে দোকানপাট বন্ধ করা শুরু করে। তবে রাস্তায় কোন বাস চলাচল চোখে পড়েনি। শহরে অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। মাঠে প্রশাসনের কোন তৎপরতা ছিল কঠোর। এছাড়া নির্মাণ কাজ চালু থাকায় শহরের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের আনাগোনা দেখা গেছে। জরুরি সেবাসমূহের দোকানপাট খোলা ও যান চলাচল করেছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে। দোকানপাট খোলা রাখায় ২ দোকানদারকে ও মাস্ক না পড়ায় দুইজনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার আহম্মেদ, ওসি মো. মুশফিকুর রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিভিন্নস্থানে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এবং লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায়, ৯ মামলায় ২১,৫০০/- টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল সকাল ১০টা হতে দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার ভূমি সেলিম শেখ এই অর্থদন্ড ও মামলা করেন। লকডাউন কার্যকর করতে অভিযানে বের হন দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর মোহাম্মদ আলী (অব.), উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সেলিম শেখ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম নয়ন, কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি রকিব উদ্দিন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, সরকার জনগণের জানমাল রক্ষায় এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। লকডাউন সময় যে সকল দোকানপাট জরুরি প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করে সে সকল দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারে চলাফেরা করতে হবে, পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী ওঠাতে হবে। অমান্য করলে দন্ডবিধির ২৬৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন