নড়াইল জেলা সংবাদদাতা
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নেন ঘাঘা অংশে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে উপজেলার চার ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম এবং ১৩টি মাঠের ফসল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নড়াইল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওই এলাকা নদীতে বিলীন হলে ওই বছরই পুনরায় নতুন করে তার পাশে মাটি দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়। ওই বাঁধে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার সকালে দেখা গেছে, ঘাঘা গ্রাম এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার অংশে বাঁধের পাঁচ জায়গায় মধুমতী নদীতে বিলীন হতে চলেছে। বাঁধের এই পাঁচ জায়গায় অর্ধেকের বেশি অংশ নদীতে গেছে। বাকিটুকুতে ফাটল ধরেছে। ফাটলগুলো আস্তে আস্তে নদীতে চলে যাচ্ছে। এর দুটি জায়গায় বাঁধের উত্তর পাশ দিয়ে পাউবো বালুর বস্তা সাজিয়ে পানি ঠেকানোর প্রস্ততি নিয়েছে। এ জায়গায় তীব্র ¯্রােত থাকায় পানিতে পাক খাচ্ছে। এলাকার মানুষ নদীর পাড়ে ভিড় করছেন। তারা দ্রুত নদীর ভাঙনরোধ এবং নতুন বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতি বছরই এখানে ভাঙন দেখা দেয়। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধের ওই অংশ নদীতে বিলীন হবে। আর তখন কোটাকোল, ইতনা, মল্লিকপুর ও দিঘলিয়া ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম এলাকা বন্যায় প্লাবিত হবে। এতে ফসল ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক পবিরার আশ্রয়হীন হবে। এছাড়া এ এলাকার ফটকের বিল, ঘাঘা, রাধানগর, ইতনা, পাংখারচর, পাচুড়িয়া, মঙ্গলহাটা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া, সোনাদাহ, কোটাকোল, যোগিয়া ও ধলইতলার মাঠের ফসল পানিতে তলিয়ে যাবে। এছাড়া এ বাঁধটি এলাকার তিনটি ইউনিয়নের লোকজনের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। ঘাঘা গ্রামের সোহাগ শেখ (৩২) জানান, তাঁদের ঘাঘার মাঠে চার একার জমিতে আমন ধান এবং তিন একরে পাট আছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকলে এসব ফসল মুহূর্তে পানির নিচে চলে যাবে। তিনি বলেন, এক একর ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। দুইবার বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে না খেয়ে মরতে হবে। ওই গ্রামের রাসেল শেখ (৩৫) বলেন, ঘাঘার মাঠে সাড়ে পাঁচ একর জমিতে আমন ধান এবং প্রায় তিন একরে পাট। এর ওপরই চলে সারা বছরের সংসার। এটি প্লাবিত হলে পথে বসতে হবে। ইউপি চেয়ারম্যান মো. হিমায়েত হোসেন বলেন, এ এলাকার ১৭টি গ্রামের মানুষকে বাঁচাতে হলে নতুন বাঁধ নির্মাণ করে পানি ঠেকানোর পাশাপাশি নদী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাউবোর লোহাগড়া উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ এইচ এম আল জহির বলেন, যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে এলকায় পানি ঢুকতে পারে। এতে এলাকায় সর্বনাশ হয়ে যাবে। তাই পানি ঠেকানোর চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়া ওই এলাকার ভাঙনরোধে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো আছে। কিন্তু এখানো বরাদ্দ হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন