মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
মুকসুদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের হাফেজ শিকদারের নিহত হওয়ার একই ঘটনায় পৃথক দুজনের দুটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রামের প্রভাবশালীদের কারণে ন্যায্য বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করেছেন নিহতের স্ত্রী মোসাঃ রিমা আক্তার। জানা যায়, গত ২০ জুন কেরম খেলার সময় কেরম বোর্ডের উপর রাখা রাজিব শেখের একটি মোবাইল নিহত হাফেজউদ্দীনের হাতের ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যায়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বচসা হয়। এরই সূত্র ধরে সন্ধ্যার পরে হাফেজউদ্দীনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাজিব শেখ, উজ্জল শেখ,সালাউদ্দীন শেখ ও পান্নু শেখ। চিকিৎসা দিতে বিলম্ব হওয়ায় রক্ত ক্ষরণে হাফেজউদ্দীন মারা যায় বলে অনেকে মন্তব্য করেছে। এ ঘটনায় হাফেজউদ্দীন দূর সম্পর্কের এক চাচা আক্কাচ শিকদার বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামী করে গত ২২ জুন মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনার মূল হোতা রাজিবকে পরদিনই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মামলার পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামী রাজিব ঘটনার সত্যতা স্মীকার করে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয়। পরবর্তিতে নিহত হাফেজের স্ত্রী মোসাঃ রিমা আক্তার রাজিব শেখ, উজ্জল শেখ, সালাউদ্দীন শেখ ও পান্নু শেখসহ ৭ জনকে আসামী করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে আরো একটি মামলা দায়ের করে। রাজিব শেখ, উজ্জল শেখ, সালাউদ্দীন শেখ ও পান্নু শেখ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে জানায় রিমা আক্তার। মুকসুদপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত করে মানিত স্বাক্ষী ও স্থানীয়দের সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ১০জনের মধ্যে উক্ত চারজনকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দায়ের করেন। সে অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে প্রথম মামলার বাদী আক্কাচ শিকদার নারাজী দিলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিআইবিকে নির্দেশ দেন। দ্বিতীয় মামলা কেন করা হলো মোবাইল ফোনে এমন এক প্রশ্নের উত্তরে নিহত হাফেজের স্ত্রী জানান, প্রথম মামলা যিনি করেন তিনি তার স্বামীর দূর সম্পর্কের চাচা। গোবিন্দপুর গ্রামে দুটি প্রভাবশালী দলের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিবাদ চলে আসছে। তার স্বামী হাফেজ একজন গরীব ভ্যান চালক। তার মৃত্যুকে নিয়ে প্রভাবশালী একটি পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের নাম দেয়ায় প্রকৃত দোষীরা সাজা থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে সে জন্য তিনি পরবর্তি মামলা করেছেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রিমা জানায়, ঘটনার দিন পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনা স্থলে আসলে আক্কাচ শিকদার এবং অপর কয়েকজন তাদের সঙ্গে কথা বলতে না দিয়ে অন্য একটি ঘরে তাকে আটকে রাখে। দশ মাসের অন্তসত্বা রিমা আক্তার আরো জানায়, স্বামীর মৃত্যুর পরে তার দেবররা তার উপর বিভিন্ন প্রকার মানষিক নির্যাতন করে এবং আক্কাচ শিকদার তার নামে বিভিন্ন কুৎসা রটনা শুরু করলে বাধ্য হয়ে সে দিন মজুর বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তার এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালীরা নিজেদের শত্রুতা সাধনের চেষ্টা করছে। তাদের কারনে স্বামী হত্যার সঠিক বিচার হবে কিনা তা নিয়ে রিমা সংশয় প্রকাশ করে। এ বিষয়ে আক্কাচ শিকদার জানান, দায়ের করা মামলার এজাহার পড়লেই আমার বক্তব্য জানতে পারবেন বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন