ধলেশ্বরী আর ইছামতি নদী নিয়মিত খনন না করায় চর পড়ে ধীরে ধীরে যৌবন হারিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। তীব্র খরস্রোতায় ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীতে চর পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে লৌহজং-ঢাকা, তালতলা-মুন্সীগঞ্জ-নারায়নগঞ্জ নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল। ফসলি জমিতে সেচ কার্যক্রম ও মালামাল পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। কমেছে ফসল উৎপাদন এবং মৎস্য আহরণ।
জানা যায়, সিরাজদিখান টংগীবাড়ী লৌহজং উপজেলার জনগণ প্রধানত নৌপথে ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ ও নারায়নগঞ্জে যাতায়াত করত। গত একযুগ পূর্বেও লৌহজং কাঠপট্টি হয়ে ঢাকায় যাত্রীবাহী বড় বড় লঞ্চ ও মালবাহী কার্গো চলাচল করত। এখন শুস্ক মৌসুমে ধলেশ্বরী আর ইছামতি নদীতে ছোট ছোট নৌকা ছাড়া অন্য কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না। কাঠপট্টি লঞ্চঘাটের পূর্বপাশে বিশাল চর পড়ছে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে কাঠপট্টি-মুন্সীগঞ্জ নৌযোগাযোগ। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক সংযোগ খাল। যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিআইডব্লিউটিএ তালতলা, বেতকা ও আবদুল্লাপুর লঞ্চঘাটের পল্টুন সরিয়ে নিয়েছে। নৌপথকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মীরকাদিম বন্দর, তালতলা, বেতকা এবং আবদুল্লাপুর বাজার এখন মৃত প্রায়। নাব্যতা সঙ্কটে মীরকাদিম বন্দরের কাঠপট্টি ঘাটও বন্ধের উপক্রম। গত বছর বেতকা ব্রিজের পর থেকে আবদুল্লাপুর পর্যন্ত ধলেশ্বরী নদীর নাব্যতা ফেরাতে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং করে। নিয়মিত ড্রেজিং না করায় তা কাজে আসেনি।
বেতকা গ্রামের আলুচাষি জামাল বেপারী জানান, শুষ্ক মৌসুমে ধলেশ্বরী নদীতে পানি না থাকায জমিতে সেচ দেয়া যায় না। বিশেষ করে আলু মৌসুমে জমিতে নদী থেকে পানি দিতে না পারায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায় এবং ফসল উৎপাদনও কম হয়। বেতকা বাজারের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব খাঁন জানান, ধরেশ্বরী ইছামতি নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বেতকা বাজারের আলুর আড়ৎ এবং হাট হুমকির মুখে। তিনি নদী দুটিতে নিয়মিত ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, নদীর নাব্যতা সঙ্কটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস জানান, ব্যক্তি স্বার্থে নদী দখল আর মানবসৃষ্টে ভরাট হওয়ায় নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে। বর্তমান সরকার নৌপথের গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন