সন্ধ্যা ৭টা পেরিয়েছে কয়েক মিনিট আগে। এসময় টেবিলে থরে থরে সাজানো থাকার কথা নানা ধরনের সুস্বাদু ইফতার আইটেম। কিন্তু তা দেখা যাচ্ছে না। সূর্য অস্ত যাবে যাবে ভাব, তবু মেয়ের ২১ বছরের মা আয়েশা আল-আবেদ রান্না ঘরেই শসা কাটতে ব্যস্ত। তার কাজে সহযোগিতা করছেন বছর চারেকের মেয়েটি। এক বার্নারের চুলাকে ঘিরে রান্না ঘরটি বেশ অগোছালো। কাঠের দেয়ালে ঘেরা তাদের তাঁবু, মেঝে কংক্রিটের। অভাবের চিহ্ন সবখানেই। এটাই হচ্ছে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আশ্রিত সিরিয়ার শরণার্থী একটি পরিবারের অবস্থা। টেবিলে সাজানো ভাত, মসুরের ডাল, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং ছোট বোনের পাঠানো মুরগি ও মাছ।
আল আবেদ বলেন, ‘এটি একটি খুব কঠিন রমজান যাচ্ছে’। আরো ভাল খাবার হওয়া উচিত ... দিনভর রোজা রাখার পর শরীরের আরো পুষ্টি প্রয়োজন। আমি খুবই ক্লান্ত বোধ করছি’।
সিরিয়ার শরণার্থীদের বাস্তুচ্যুত জীবন তাদের বর্তমান আশ্রয়স্থল লেবাননের অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে আরো কঠিন হয়ে উঠেছে। পবিত্র মাসে এই লড়াই আরো স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় যখন রোজা সাধারণত খালি পেটে শুরু করা হয়।
আল-আবেদের চব্বিশ বছরের স্বামী রায়েদ মাত্তার বলেন, ‘উচ্চমূল্যের কারণে লোকজন মরতে বসেছে’। আমরা সারা দিন রোজা রাখি আর ইফতারে মেলে কেবল একটি পেঁয়াজ’। ১০ লাখেরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থীর আবাসভ‚মি লেবাননের রাজধানীর এক অংশে গত আগস্টের মহাবিস্ফোরণে ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত হয়েছে এবং একই সাথে করোনাভাইরাসের ধাক্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে দেশটি। এসব কারণে চলতি করোনা মহামারীর মাঝে রমজান এলেও এসব শরণার্থী পরিবারে রোজার প্রকৃত আমেজ নিয়ে আসেনি। তাদের এই জীবনের কবে পরিসমাপ্তি ঘটবে সেদিকেই তাকিয়ে আছে সবাই। সূত্র : এপি, দ্য পেনিনসুলা কাতার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন