লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে।পানিবাহিত এ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তীব্র গরম ও বিশুদ্ধ পানি সংকটের প্রভাবে এমনটাই হচ্ছে বলে ধারণা করছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে জানা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকা থেকে গত সপ্তাহে প্রায় ২৫০জনের মত ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৯৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।রোগীর উপস্থিতি এতটাই বেশি যে,তাদের হাসপাতালের বেড সম্পন্ন করে মেঝে, বেলকুনি,সিঁড়ি ঘরে রেখে ও চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
শনিবার (২৪এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৯৫জন রোগী রেজিস্টারকৃত ভর্তি চিকিৎসা চলছে। রোগীর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসা দিতে ডাক্তার ও নার্সরা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে।
এছাড়াও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলোতে খবর নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঔষধ সংকট দেখা দিচ্ছে। প্রতিদিন প্রতিটি ক্লিনিকে ৮-১০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
এসময় আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার(আর এম ও) ডাক্তার আমিনুল ইসলাম মঞ্জু জানান, করোনাকালীন মুহুর্তে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে রেখে এসব রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের পাটোয়ারী জানান, হঠাৎ করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। করোনাকালীন সময়ে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা নিয়ে ডাক্তার এবং নার্সরা বিপাকে পড়ে। তবে সব কিছু ঠিক রেখে যথাযথ ভাবে এসব রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট। গত কয়েক দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দাড়ায় ২৫০ জন থেকে ৩ শত জনের। এরমধ্যে বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৯৫ জন।
ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, বিশুদ্ধ পানি ও তীব্র গরমের কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের কারণেও হতে পারে। বাহিরের খাবার ত্যাগ ও বিশুদ্ধ পানি পান করলে এর সঠিক সমাধান হতে পারে। এছাড়াও সবাইকে করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
ডাঃ আবু তাহের আরও জানান, হাসপাতালে আপাতত মেডিকেল ডাক্তার সংকট নেই। তবে ২০ জন নার্সের মধ্যে মাত্র ০৮ নার্স রয়েছে। এতে রোগীদের সেবা সংকট দেখা দিচ্ছে। রোগীদের মেডিসিন চাহিদা আপাতত সংকট নেই। তবে মেডিসিন চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার প্রতিটি বাজারে যেন অন্তত একটি ফার্মেসি ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তাছাড়া উপজেলার জনসংখ্যা বিবেচনায় হাসপাতালটিকে অতিসত্বর ৫০ শয্যা থেকে ১০০শয্যায় উন্নীতকরণসহ জনবল ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে এ কর্মকর্তা মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন