শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সাতক্ষীরার কামাররা পার করছেন ব্যস্ত সময়

প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার পবিত্র কোরবানির ঈদ। আর এই ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরা জেলার কামাররা। এখন তাদের দম ফেলার সময় নেই। দিন-রাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলা শহরসহ উপজেলার প্রতিটি কামারপাড়া। সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার কামার পাড়ায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পীরা দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে কাজের চাপ বেশি থাকলেও মজুরি নিয়ে সন্তুষ্ট নন তারা। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে দা, বটি, চাপাতি, চাকুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করছেন কামাররা। বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প। এসব ব্যবহার্য জিনিস জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও নিয়ে যাচ্ছেন। সহিল নামের একজন কামার বলেন, মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে, ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয়তো-বা এক সময় এই পেশা আর থাকবে না। তবে কুরবানির ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই। এটি আমাদের বাপ-দাদার পেশা বলে শত কষ্টের মধ্যেও ধরে রেখেছি। সারা বছর তেমন কোনো কাজ না থাকলেও কুরবানির সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। শহরের রাজার বাগান কলেজ মোড়ের কামার ব্যবসায়ী একোব্বর হোসেন বলেন, আমরা সারা বছর অলস সময় পার করলেও কোরবানির ঈদ আসলেই অধিক শ্রম দিয়ে বেশি আয়ের স্বপ্ন দেখি। কিন্তু কয়লা ও লোহার দাম  বেশি হওয়ায় আমাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে যেতে বসেছে। ছুরি, বটিসহ লোহার বিভিন্ন রকমের যন্ত্রপাতি তৈরিতে আমাদের ব্যয় বেশি হলেও উপযুক্ত মূল্যে কিনছেন না ক্রেতারা। ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির বিক্রি নিয়ে চিন্তিত আমরা। খোকন  নামে এক কামার ব্যবসায়ী বলেন, আমার বাবা এলাকার নাম করা কামার ছিল। বাপের কাছ থেকে এই কাজ শিখে আমারা এই ব্যবসা করছি, প্রতিবছর কুরবানী ঈদ আসলেই কিছু লাভের আশায় আমারা ব্যবসায় একটু জোর দেই। আমাদের এই সব যন্ত্রপাতি বানানোর জন্য আমার বাইরে থেকে লোহা ও কয়লা কিনে আনি। কিন্তু আমরা দিন রাত এতো পরিশ্রম করেও খুব একটা লাভের মুখ দেখি না। লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তৈরি সামগ্রীর দামও বেড়ে যাচ্ছে। তৈরি যন্ত্রপাতি বেশি দামে কিনতে রাজি হয় না ক্রেতারা। তাছাড়া কিছু চায়না ছুরি, চাকু মার্কেটে এসেছে। এতে করে আমাদের মার্কেট আরো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্য কোন কাজও পারি না, না খেয়ে হলেও এই পেশায় থাকতে হবে। আব্দুল গফুর নামের কামার অভিযোগ  করে বলেন, বছরে এই সময় চাপাতি, ছুরি, বটির চাহিদা বেশি থাকে। লোহা, কয়লার দাম বৃদ্ধি এবং পরিশ্রমও করতে হয় বেশি। সে তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারা দিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরেনের সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। যে কারণে এখন অনেক কর্মকার এগুলো বানাতে উৎসাহ হারাচ্ছেন। তারা অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন