শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লোহাগড়া-মহাজন সড়কের সংস্কার : ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও পিচ, স্থানীয়দের বাড়ছে ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : লোহাগড়া-মহাজন সড়কের সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সড়কের আশেপাশের এলাকার লোকজনসহ পথচারীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার লোহাগড়া-মহাজন ও লোহাগড়া-কালিশংকরপুর সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সাধারণ মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সম্প্রতি লোহাগড়া-মহাজন সড়কের ১৩ কিলোমিটার ও কালিশংকরপুর সড়কের ১০.৪৫ কিলোমিটার সংস্কার ও কার্পেটিংয়ে ৬ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। নড়াইল জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রে কাজ পায় বাগেরহাটের ঠিকাদার মুজাহার এন্টারপ্রাইজ। গত ২৪ ডিসেম্বর ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। দরপত্র অনুযায়ী চলতি বছরের ২৬ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা। আরও জানা যায়, সড়কে বিভিন্ন খানাখন্দ মেরামতের জন্য কার্যাদেশে ১ নম্বর ইট, ৪০ মিলিমিটার পুরু কার্পেটিং করার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে পথচারী ও যানবাহন চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিম্নমানের খোয়া এবং পিচ ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার কাজ চলছে। তারা আরও জানায়, দিঘলিয়া এলাকায় সড়কে ব্যবহৃত পাথর ও নিম্নমানের খোয়া উঠতে শুরু করেছে। কোলা গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুল মান্নান বলেন, দুই নম্বর ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তার কাজ চলছে। পিচের পরিমাণ কম। এ রাস্তা বেশি দিন থাকবে না। কোলা মৃধাবাড়ীর রং মিস্ত্রি মুরাদ শেখ বলেন, শুনেছি কন্ট্রাকটররা (ঠিকাদার) কাজে ফাঁকি দেয়। বাড়ির সামনে রাস্তার কাজ দেখে এর সত্যতা পেলাম। রাস্তার কাজের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে দিঘলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আসলাম ফকির বলেন, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাস্তার কাজ হচ্ছে। তিন নম্বর ইট দিয়ে খানাখন্দ বন্ধ করা হচ্ছে। আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন চোখের সামনে ভেস্তে যাচ্ছে, দেখার কেউ নেই। কুন্দশী গ্রামের ট্রাকড্রাইভার মহানন্দ বিশ্বাস বলেন, এ রাস্তায় আমি ট্রাক নিয়ে দিনে ৪/৫ বার চলাচল করি, যে কাজ হচ্ছে তা মানসম্মত নয়। যে উপকরণ দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে তা কতদিন চলাচলের উপযোগী থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, যে কাজ হচ্ছে তা এক থেকে দুইবার ভারি বৃষ্টি হলে রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক এ প্রতিবেদককে জানায়, আমরা প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার দুরবস্থার শিকার হয়েছি আমরা শিক্ষকসহ শিক্ষার্থী ও পথচারী। আমাদের প্রাণের দাবি এই রাস্তা এত দিন পরে সংস্কার হলেও তা নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ঠিকাদার কাজ করছে। আমি এর প্রতিবাদ জানাই। এ বিষয়ে নড়াইল জেলার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তা মেরামতের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ঐ সব ইটের খোয়া কাজের সাইড থেকে সংশ্লিষ্ট লোকদের সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছি। এ ব্যাপারে ঠিকাদার মুজাহার এন্টারপ্রাইজ এর সাথে যোগাযোগের জন্য নড়াইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিংহ এর নিকট মোবাইল নাম্বার চাইলে, উভয়েই কৌশলে এড়িয়ে যান। ফলে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এলাকার সচেতন মানুষের দাবি, দ্রুত তদন্ত পূর্বক সিডিউল অনুসারে উপকরণ দিয়ে রাস্তার মেরামতের কাজ হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন