প্রায় এক মাস ধরে চলমান ‘লকডাউনে’ ঘরবন্দী খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষেরা। সুদিন ফেরার আশায় দিন গুনছেন তারা। সীমিত পরিসরে পোশাক ও শিল্পকারখানা এবং দোকানপাট খোলা থাকলেও চাকরির নিশ্চয়তা নেই কর্মীদের। প্রায় একই অবস্থা সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষেরই। এমনই এক কঠিন পরিস্থিতিতে আজ শনিবার বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস, যা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে পরিচিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনাকালের এই মে দিবসে শ্রমিকদের অধিকার ও বঞ্চনা নিয়ে নানা মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা। শ্রমিকের মর্যাদা ও শ্রমের ন্যায্য অধিকার নিয়ে দিবসটিতে ফেসবুকে সোচ্চার থাকতে দেখা যায় মানবাধিকার ও সমাজকর্মীদের।
মে দিবস নিয়ে মোঃ মিজানুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘শ্রমিক বঞ্চনার ইতিহাস নতুন নয়। সব যুগে, সব সমাজে এটি ছিল, আছে। শ্রমিকের ঘামে মালিকের প্রাসাদোপম অট্টালিকা তৈরি হলেও বহু শ্রমিককে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়। তারা দিন-রাত অক্লান্ত শ্রম দিয়েও জীবনের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করতে পারে না।অনেক সময় তারা প্রাপ্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়।’’
সালমা বেগম লিখেছেন, ‘‘জয় হোক মেহনতী মানুষের, যথা সময়ে শ্রমিকদের পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করা হোক। এদেশে এখনো অনেক পেশায় সম্মানজনক সম্মান পাইনা, আমরা চাই শোষকের দ্বারা শোষিত বন্ধ সহ প্রতিটি মানুষের কাজের মূল্য বৃদ্ধি হোক।বর্তমান এমন পরিস্থিতিতে মানুষ সম্মানজনক কাজে ও দিনরাত পরিশ্রম করিয়ে পারিশ্রমিক দিতে চাই না, তাই তো আজও বাংলাদেশ উন্নত দেশে রুপান্তরিত হয় নাই।’’
খালিদ জোবাইরের মন্তব্য, ‘‘এই মহান মে দিবসে অনেকে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে বুলি আওড়াবে, আবার পরোক্ষণেই দেখা যাবে তারাই শ্রমিকদের সাথে সবথেকে নিষ্ঠুর আচরণ করছে,,,সুতরাং শ্রমজীবী মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করুন,, তাদের অধিকার আদায় করুন,, দেখবেন আল্লহ আপনাকে তার রহমত দ্বারা ঢেকে দিবেন,,,ভালো থাকুক শ্রমজীবীরা।’’
জাহাঙ্গীর হোসাইন লিখেছেন, ‘‘আজ মহান মে দিবস!! কেন?? ৮ঘন্টা শ্রমের দাবিতে শিকাগো শহরে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। তো ৮ঘন্টা শ্রম কি আছে? থাকলে কত % কারখানায়? ১৫ ঘন্টা শ্রম দেয়ার পর ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কিছু লোক সন্তুষ্ট তো হয়ই না, বরং সমালোচনায় লিপ্ত থাকে। আর একদিন ঘুমানোর জন্য মে দিবস? হাস্য কর।’’
নারী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে মোঃ মিনহাজ আবেদীন লিখেছেন, ‘‘এখনো রাস্তায় মহিলা শ্রমিকদের কাধে করে ঝাকা টানতে দেখা যায়...নারী হয়েও তারা পুরুষের মতো শ্রম দেয় খোয়া টানে ইট টানে মাটি বালি টানে।। নারীবাদিরা কৈ? নারীর জাগরন যারা চায় তারা কৈ? এখানে কি নারী অধিকার খুন্ন হচ্ছে তারা দেখে না? তারা কি পারে না এসব অবহেলীত নারীদের জন্য কিছু করতে। আসলে এদের দেখার মত কেউ নেই।’’
সাম্প্রতিক শ্রমিক হত্যা প্রসঙ্গ টেনে মোঃ রুবেল লিখেছেন, ‘‘কিছু আগে দেখলাম চট্টগ্রামে মনে হয় এস আলম গ্রুপের বিদুৎ কেন্দ্রে বকেয়া বেতনের টাকার জন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করতেছিল। এমতাবস্থায় পুলিশ নাকি গুলি করে চার পাঁচ জন শ্রমিককে হত্যা করেছিল। এ হত্যাকান্ড কি মে দিবসের উপহার? প্রশ্ন আমার রাষ্ট্রের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।’’
সুমন সামস লিখেছেন, ‘‘মে দিবসের উদ্দেশ্য সফল হোক, আজও সেই উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না। আজও শ্রমিকরা ৮ ঘন্টার উপরে ডিউটি করে তাদের পরিশ্রমিক পাচ্ছে না। শ্রমিক দিবসের সবার শুভেচ্ছা নয় বরং শ্রমিক দিবসের মূল পাথেয় বাস্তবায়নই হোক শ্রমিক দিবসের একমাত্র লক্ষ্য।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন