চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে সাত শ্রমিক নিহতের ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মঙ্গলবার বাঁশখালী আদালতে হাজির করা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। গ্রেপ্তার দুই জন হলেন মো. জাফর ও সৈয়দ নুর। দুজনকে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সোমবার রাতে তাদের আটক করা হয়। দুজনই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশের গণ্ডামারার বাসিন্দা। এর মধ্যে মো. জাফর বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তথা এস আলম গ্রুপের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। পুলিশ জানিয়েছে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মো. জাফর ও সৈয়দ নুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রকল্প এলাকা থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাঁশখালী থানা-পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত ১৭ এপ্রিল বাঁশখালীর গন্ডামারায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার দিন নিহত হন পাঁচজন। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও দুজন। মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজানে কর্মঘণ্টা কমানোসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা।
বাঁশখালী সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিকানায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো থ্রি পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এখানে অর্থায়ন করেছে।
ঘটনার পর পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদানের ঘটনায় বাঁশখালীর গন্ডামারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রাশেদুজ্জামান বেগ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজারজনকে আসামি করা হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা, গাড়ি পোড়ানোসহ ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করে
এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের ১ হাজার ৪০ থেকে ১ হাজার ৫০ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করেন।
মামলার পর থেকে গ্রেফতার অভিযানে গন্ডামারার কয়েক টি গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন