শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নৌকায় ভেসে জনম পার কাজিপুরের চরাঞ্চলবাসীর

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে
চরাঞ্চলের বসবাসকারী মানুষের যাতায়াতের প্রধান খেয়া ঘাট মেঘাই। এর পরে রয়েছে নাটুয়ারপাড়া খেয়া ঘাটের নাম। এছাড়া তেকানী, মনসুরনগর, খাসরাজবাড়ী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশসহ বিভিন্ন এলাকায় এরকম আরো একাধিক খেয়া ঘাট রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব খেয়া ঘাট থাকে কর্ম চঞ্চল। হিংস্র যমুনার বিস্তীর্ণ জলরাশি মাড়িয়ে নৌকা যোগে এসব চরাঞ্চলের মানুষকে যাতায়াত করতে হয় নিয়মিত। ব্যবসা বাণিজ্যের কাজও নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে নৌকার নেই কোন বিকল্প। তবে এক্ষেত্রে যে যার মত সুবিধা অনুযায়ী ছোট-বড় নৌকা ব্যবহার করে থাকেন। সব মিলিয়ে নৌকাই ভেসে জনম পার করছেন চরাঞ্চলবাসী। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি চরাঞ্চল ঘুরে এরকম তথ্য ওঠে আসে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোট ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন যমুনার বুকে জেগে ওঠা বড় বড় চরের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এরমধ্যে রয়েছে নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, মনসুর নগর, চরগিরিশ ইউনিয়নের নাম। এসব ইউনিয়নে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করেন। যাদের চলাচলের একমাত্র পথ পানিতে টুইটম্বর যমুনা। আর বাহন হলো শুধুই নৌকা। বাইরের কেউ এসব এলাকায় যেতে চাইলে তাদেরকেও একইপথ ও বাহন ব্যবহার করতে হয়। তখন ভর দুপুর। নাটুয়ারপাড়া খেয়া ঘাট। ঘাটের পাশেই রয়েছে বেশ কিছু গাছপালা ও উঁচু স্থান। সেই স্থানে টানানো ছাউনির নিচে বেশ কিছু চেয়ার রাখা হয়েছে। খেয়া ঘাটের এই স্থানে দেখা গেলো মানুষের জটলা। সবাই নৌকা আসার অপেক্ষায় বসে বা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আবার যাত্রী বা পণ্য বোঝাই করে অনেক নৌকাকে যমুনার বুক চিরে আসা-যাওয়া করতে দেখা গেলো। কলেজছাত্রী সালমা খাতুন। তিনি কাজিপুর সরকারি মনসুর আলী কলেজে লেখাপড়া করেন। বাড়ি নাটুয়ারপাড়া চরে। কলেজ চলাকালীন সময়ে তাকে প্রত্যেক দিন এই খেয়া ঘাট হয়ে নৌকা যোগে চলাচল করতে হয়। মিলি আকতার নামে আরেক কলেজছাত্রী এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা এখানে জন্মগ্রহণ করেছেন। তারও জন্ম এখানে। জমিজমা বলতে যা তা এখানেই আছে। বসতবাড়িও এখানে। সংসারও অভাবী। তাই ইচ্ছে থাকলেও শহরে যাওয়া যায় না। কেননা শহরের থাকতে হলে জায়গা জমি কিনতে হবে। বাসাবাড়ি বানাতে হবে। সেই সামর্থ্য পরিবারের নেই। এ কারণে যমুনা ছাড়ার কোন উপায় নেই। আর ছোট থেকে নৌকায় চড়তে চড়তে ভয়ও ভেঙে গেছে। আবুল হোসেন, রহমত আলী, সেকেন্দার হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আগে তো অনেক ছোট নৌকায় যাতায়াত করতে হতো। যে সময় নৌকায় পাল ব্যবহার করা হতো। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতো অনেক সময় লাগাতো। কিন্তু আগের সেই জামানা আর নেই। এখন সব নৌকা শ্যালোমেশিন চালিত। নৌকাও আকারে বেশ বড়। সংখ্যাও অনেক। মানুষের পাশাপাশি পণ্য বহনের কাজে এখন বড় বড় নৌকা ব্যবহার হচ্ছে বলে জানান চরাঞ্চলে বসবাসকারী এসব ব্যক্তিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন