শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ছনে ঘুরে ভাগ্যের চাকা চরাঞ্চলের মানুষের

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে

বিশাল জলরাশি যমুনা। কখনো থাকে শান্ত। আবার মূর্ত আকার ধারণ করতেও সময় লাগে না এই যমুনার। কখনো মানুষকে বুক উজাড় করে সবকিছু ঢেলে দেয়। আবার মুহূর্তেই সবকিছু কেড়ে নেয় রাক্ষুসে সেই যমুনা। প্রকৃতির এই বিশাল জলধারার ভাবনাটা বোঝাই মুশকিল। পানি কমে যাওয়ায় ছোট-বড় ভাঙনের অসংখ্য চিহৃ তার দু’কূলজুড়ে। বুকজুড়ে জেগে উঠেছে মাইলের পর মাইল চর। সেখানে গজিয়ে উঠেছে ছন। চারদিকে শোভা পাচ্ছে ছন পাতার সবুজ রঙ। আকাশে ঘুরপাক করছে সাদা-কালো মেঘের ভেলা। আর হাওয়ায় দুলছে ছনের গাছগুলো। চরাঞ্চলের মানুষগুলো চরের সেই ছন বাগানগুলোতে ব্যস্ত থাকছেন সারাদিন। কাস্তে বা অন্য কোনো ধারালো জিনিস নিয়ে তারা প্রবেশ করেন ছনের বাগানে। এরপর সেগুলো তারা কাটেন। পরে সেগুলো আঁটি করে বেঁধে নৌকায় ভরে বাড়ি ফেরেন তারা। শুকানোর পর তারা ছনগুলো নিয়ে বিক্রি করেন। আবার দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এসে এগুলো কিনে নিয়ে যান। তৈরি করেন বিভিন্ন সামগ্রী। ফলে ছনের সঙ্গে ভাগ্যের চাকা ঘুরছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের চরাঞ্চলের মানুষগুলোর। যমুনার দু’কূল ঘেঁষে বিভিন্ন স্থানে একাধিক নৌকা চোখে পড়ল। কিন্তু নৌকাগুলোতে তেমন একটা মানুষের দেখা মিলল না। জানা গেল নৌকায় আসা মানুষগুলো ছন কাটতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ছন বাগানো প্রবেশ করেছেন। জামালউদ্দিন, গুলজার হোসেন, আব্দুল মোমিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, চরাঞ্চলের মানুষ যমুনার সঙ্গে নানাভাবে লড়াই করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন। প্রতিদিন সকালে বাড়ির কাজ সেরে খাওয়ার পর সবাই ছুটে পড়েন জীবিকার সন্ধানে। সন্ধ্যায় তারা ঘরে ফেরেন। এসব ব্যক্তি আরো জানান, ছন কেটে নৌকায় ভরে রাস্তা আছে-এমন স্থানে গিয়ে নৌকা ভেড়ান। এরপর ছনগুলো নৌকা থেকে নামানো হয়। সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছনগুলো বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেগুলো নারী-পুরুষের মিলিত চেষ্টায় শুকিয়ে আঁটি বেঁধে গুছিয়ে রেখে দেয়া হয়। পরে চাহিদা অনুযায়ী ছনগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হয়। আবার অনেক সময় বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি এসে এসব ছন ক্রয় করে থাকেন। চরের এসব ছন দিয়ে বাহারি ডিজাইনের সামগ্রী বানানো হয়। আর সেসব সামগ্রী দেশ ও দেশের বাইরে চলে যায় বলে জানান চরাঞ্চলের লোকজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন