বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ভ্রমণপ্রিয়দের ভিড় মেঘনা তীরে

ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই

আমানত উল্যাহ ও কাজী মো. ইউনুছ, মেঘনাপাড় থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার মেঘনাপাড়ে। উপস্থিতি অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে ভ্রমন প্রিয় লাখো মানুষের সমাবেশ। সচেতন মহলের আশঙ্কা করোনাভাইরাস সংক্রমণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা।

সরেজমিনে মেঘনার তীরে দেখা যায়, করোনা মহামারীর এই কঠিন মুহূর্তে মেঘনানদীর তীরে লাখো জনতার উপচেপড়া ভীড়। নারী পুরুষ শিশু ও বৃদ্ধাসহ সব শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ও কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহার ও মতিরহাটসহ মেঘনার তীরের বিভিন্ন স্পটে ঢোল বাদ্য বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের নামে মহাযন্ত্রণা দিচ্ছে এলাকাবাসীকে। ঈদ আনন্দের নামে সড়ক ও বাজারগুলোতে শত শত গাড়ির বহর ও ঢোল বাদ্যের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। মাস্ক, স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই। থানা ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই উচ্চ আওয়াজের বাদক দল নাচানাচি করে পিকআপ ভর্তি হয়ে অবাধ চলাচল রীতিমতো বিরক্তিকর। অপরদিকে চলমান করোনা পরিস্থিতির উদ্বেগজনক অবস্থায় এহেন অনিয়ন্ত্রিত উৎসবকে তামাশা বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে প্রায় লাখো মানুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। মেঘনার তীরে মানুষের উপস্থিতি কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের মত। চলমান লকডাউনকরোনা মহামারীতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনের অবাধ যাতায়াত রামগতি-কমলনগরের জন্য এক অশনি সংকেত। এসবের বিরুদ্ধে এবং চলমান লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশকে দেয়া বিচারিক ক্ষমতার সফল বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।

কক্সবাজার, কুয়াকাটার মতো সমুদ্র সৈকতগুলো বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলে ভ্রমন প্রিয় মানুষ ল²ীপুর জেলার মেঘনাপাড়ে ভিড় করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ ছিলনা দর্শনার্থীদের মাঝে। মাস্ক পরতেও দেখা যায়নি কাউকে।

ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন ব্যাপক সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি ঘটেছে। আশপাশের জেলা উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দর্শনার্থীরা মেঘনার সৌন্দর্য দেখতে আসছেন। ট্রলারে, স্পিডবোটে করে নদী ও চরে ঘুরছেন। লকডাউন জেনেও এবারের ঈদে মেঘনা পাড়ের বেড়িবাঁধ এলাকায় হোটেল রেস্তোরাঁর সংখ্যা বেড়েছে। নতুন করে স্থাপিত হয়েছে বেশ কয়েকটি রেস্তোরা।

নোয়াখালীর মাইজদী থেকে ঘুরতে আসা মো. সাইদ হোসেন, রিয়াদ, আজগর বলেন- লকডাউন জেনেও এখানে আসছি। এতো লোক হবে ধারনা ছিলো না।

সোস্যাল এক্টিভিস্ট মাসুদ সুমন জানান, লকডাউনে এতো বেশি জনসমাগম কাম্য না। এ ব্যাপারে প্রসাশনের হস্তক্ষেপ জরুরি।

ব্যাপক জনসমাগম নিয়েও সোস্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা নানান মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় প্রসাশনের দুর্বলতাও দেখছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপের কথাও বলেছেন অনেকেই।

রামগতি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান ও সংবাদকর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের দিন সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী শত শত গাড়ির বহর ঢোল বাজিয়ে নদীর পাড়ে আসেন। করোনা মহামারীতে লাখো জনতার অবাধ যাতায়াত মেঘনাপাড়ের মানুষ আতংকিত।

রামগতি থানার ওসি মো. সোলাইমান বলেছেন, পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে আর কাউকে বেড়িবাঁধ এলাকা উঠতে দেয়া হবে না।

রামগতি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমিন বলেন, ঈদের দিন বিকেলে প্রচুর লোক চলে আসছে। আনসার সদস্যের টিম পাঠানো হয়েছে। জনসমাগম বন্ধ থাকবে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী রয়েছে। নদীর তীরে কোন সমাগম যাতে না হয়, সেজন্য এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন