লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার ৩১ কিলোমিটার মেঘনার তীর সংরক্ষণ বাঁধ রক্ষা প্রকল্পে ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা লক্ষমাত্রার ফাইলটিতে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ মান্নান (এমপি) স্বাক্ষর করেছেন। চলতি মাসের ১৭ তারিখে মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত এ ফাইলটি আগামী একনেক সভায় উপস্থাপিত হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত হয়ে অর্থ ছাড় পাওয়ার মাধ্যমে তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে এমন আসা করছেন রামগতি-কমলনগরের মেঘনা উপকূলীয় সাড়ে সাত লাখ মানুষ।
এর আগে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গন থেকে রামগতির আলেকজান্ডার বাজার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রক্ষায় ২০১৪ সালে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৮ কোটি টাকা অর্থ ছাড় দেয় সরকার।এতে রামগতির আলেকজান্ডার বাজার রক্ষায় পৌনে ৩ কিলোমিটার কাজ সেনাবাহিনী ও কমলনগরের মাতব্বরহাট বাজার রক্ষায় ১ কিলোমিটার বাধের কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। এরই মধ্যে মেঘনার ভাঙ্গনের মুখে বিলীন হয়ে যায় দুই উপজেলার সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বহু বসতবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকা।পাশাপাশি ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ হওয়া ও পরিকল্পনানুযায়ী সার্ভে করার মাধ্যমে রামগতির বয়ারচর হতে কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত মেঘনার ভাঙ্গন কবলিত ৩১ কি:মি: তীর সংরক্ষণের জন্য ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প উন্নীত করণে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাবিত লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার বড়খেরী,লুধুয়া বাজার ও কাদির পন্ডিতেরহাট এলাকা রক্ষা বাঁধ শীর্ষক প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে মোট ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার প্রাক্কালিক ব্যয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্তে চলতি সপ্তাহে একনেক সভায় উপস্থাপন জন্য সার সংক্ষেপ (পতাকা-ক) এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। উক্ত প্রকল্পটির খসড়া প্রণয়ন সার সংক্ষেপ (পতাকা-ক)চলতি মাসের ১৭ তারিখে পরিকল্পনা মন্ত্রী চুড়ান্ত স্বাক্ষরে অনুমোদিত হয়ে এ সপ্তাহের একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য চুড়ান্ত করা হয়।এতে রামগতি-কমলনগরের সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আশার আলো দেখছেন।
যে প্রস্তাবনার এই ফাইলটি চূড়ান্তভাবে পাস করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সহ তৎসংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী-সচিবদের নিকট দিনের পর দিন ধর্না দিয়ে দীর্ঘদিন আটকে থাকা ৩১ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণের এ ফাইলটি চুড়ান্ত অনুমোদনের কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবদুজ্জাহের সাজু। এক সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা আবদুজ্জাহের সাজু নদীভাঙ্গন কবলিত রামগতির সন্তান। নিজের জন্মভূমি রামগতি-কমলনগরের মানুষের প্রধান সমস্যা নদীভাঙ্গা নিয়ে বিগত কয়েক বছর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
চরকাদিরা ইউনিয়ন আ.লীগ নেতা ওমর ফারুক ভূঁইয়া বলেন, আব্দুজজাহের সাজু একজন জনপ্রিয় নেতা। দলীয় নেতাকর্মীদের সুখে দুঃখে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন তিনি। এখানকার প্রধান সমস্যা নদী ভাঙন। সাজু রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নদী বাঁধের ফাইল নিয়ে। সে জনপ্রতিনিধি হলে রামগতি-কমলনগরবাসীর ভাগ্য বদল হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাঠারিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান এড. একেএম নুরুল আমিন রাজু বলেন, মেঘনার ভাঙন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুজজাহের সাজু ব্যাপক পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তার প্রচেষ্টায় আশার আলো দেখতে পাবে রামগতি-কমলনগরবাসী।
এ বিষয়ে আব্দুজজাহের সাজু বলেন, রামগতি-কমলনগরবাসীর প্রাণের দাবি নদী বাঁধ। তাই আমি এই প্রজেক্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়,পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ নানা দপ্তরে যোগাযোগ ও তদবীর করে একটা পর্যায় নিয়ে আসি। আশাকরি চলতি সাপ্তাহে একনেকের বৈঠকে এটি অনুমোদন হবে। দ্রুত নদী বাঁধের একটা সুখবর পাবে এলাকাবাসী। তিনি বলেন, আমার বাকি জীবনটা রামগতি-কমলনগরবাসীর সুখে-দুঃখে কাটাতে চাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন