পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
পীরগঞ্জে অপেক্ষাকৃত মূল্য কম হওয়ায় মাটি দিয়ে তৈরি ব্যাংক, হাঁড়ি-পাতিল, দই রাখার খুঁটি, কলসসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ উপজেলায় প্রায় দু হাজার মৃৎশিল্পী পরিবার বসবাস করে। এসব মৃৎশিল্পীরা তৈজসপত্র জিনিসের পাশাপাশি স্যানেটারি পায়খানার প্রধান উপাদান (কুয়ার পাট) তৈরি করে সুলভ মূল্যে বিক্রি করে তাদের পৈতৃক পেশায় টিকে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। মৃৎশিল্পীরা জানান, সিলভার, প্লাস্টিকের সামগ্রী বাজারে আসায় তাদের উৎপাদিত মাটির তৈজসপত্র সামগ্রীর চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা বিকল্প দ্রব্য হিসেবে স্যানেটারি পায়খানার পাট তৈরিতে মনোনিবেশ করে। কম দামে বিক্রি করায় কয়েক বছরের ব্যবধানে মাটির তৈরি এ স্যানেটারি সামগ্রী জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মৃৎশিল্পী লাঠ মিঠিপুর গ্রামের বিনয় চন্দ্র পাল জানায়, প্লাস্টিক, সিলভার ও সিরামিক দিয়ে তৈরি উন্নত ও টেকসই পণ্য বাজারে সয়লাব হওয়ায় তাদের উৎপাদিত দ্রব্যাদি যখন ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারছে না এ সময় তারা জীবন বাঁচানো ও পৈতৃক পেশায় টিকে থাকার উদ্দেশ্যেই স্যানেটারি সামগ্রী তৈরি শুরু করে। তিনি আরও বলেন, সিমেন্ট, বালি ও কংক্রিটের সংমিশ্রণে তৈরি একটি স্যানেটারি পায়খানা তৈরি করতে প্রায় ৮/১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর সেখানে তাদের উৎপাদিত সামগ্রী ব্যবহার করে ৩/৪ হাজার টাকায় উন্নতমানের স্যানেটারি পায়খানা তৈরি করা সম্ভব। বর্তমানে এ উপজেলার মৃৎশিল্পীরা খুব একটা ভালো নেই। চরম অর্থকষ্টে অনেকেই ইতোমধ্যে তাদের পৈতৃক পেশা পরিবর্তন করেছে। পুঁজির অভাব, উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি, তৈরিকৃত মালামালের বাজার পড়ে যাওয়াসহ ইত্যাদির কারণে তারা প্রতিযোগিতায় তাদের পণ্য নিয়ে টিকে থাকতে পারছে না। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি করে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্র্রা অর্জন সম্ভব পাশাপাশি নিজেদের পৈতৃক পেশায় তাদের টিকে থাকাও সম্ভব হবে বলে মনে করছেন এই শিল্পীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন