আমিনুল হক, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রথমে ভাঙাচোরা গর্তময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এখন ফোরলেন হয়ে মধ্যখানে মিডইয়ান সৃষ্টি হয়ে সুদৃশ্যময় সড়কে রূপ নিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। পর্যায়ক্রমে সকল সংকট কাটিয়ে সড়ক উদ্বোধন হয়ে এখন শুরু হলো মনোরম সুসজ্জিত প্রাকৃতিক রূপে সাজানোর পালা। সম্প্রতি শেষ হওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৪৩.৪ কিলোমিটার এলাকায় চলছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। মিডইয়ান নামক ডিভাইডারের মধ্যখানের মাটি দেয়া ফাঁকা অংশে রোপণ করা হচ্ছে ৫৮ হাজার বকুল, হৈমন্তী/কুরচী, সোনালু, রাধাচূড়া, কেছিয়া, কৃষ্ণচূড়া, কাঞ্চন, করবী, জারুল, পলাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ। এছাড়া লন এরিয়াতে (গাছ ব্যতীত খালি অংশ) থাকবে সবুজ ঘাস। ঘাসের সমারোহ এবং নানা ফুলের বৈচিত্র্যময় নান্দনিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। এ সড়কটিকে ৫টি প্যাকেজে বিভক্ত করে চলছে এর কার্যক্রম। কোথাও কোথাও ফুলের চারা লাগানোর পর দেয়া হয়েছে সংরক্ষণের জন্য বেষ্টনীও। ফোরলেনের চট্টগ্রাম অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জুলফিকার আলীর কাছে গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) শনিবার এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই মিরসরাই সীতাকু-ে ৪র্থ ও ৫ম প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর এসব চারা রক্ষণাবেক্ষণেও থাকবে একটি বিভাগ। পুরো মহাসড়কজুড়ে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই প্রকল্পের ৫টি প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, দেশের অর্থনৈতিক লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফোরলেন গত ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। বর্তমানে এই মহাসড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় ফোরলেন প্রকল্পের মাঝে সড়ক ডিভাইডারের মধ্যে বৃক্ষরোপণের জন্য পৃথক প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়। দরপত্র গ্রহণ শেষে কনক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোজিস্ট লি. ঢাকা নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৯০ দিনের সময় দিয়ে গত ৩০ জুন এ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়া হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৮ টাকা। মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেইট পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার ফোরলেন অংশের মধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় ১৪৩.৪ কিলোমিটার এলাকায় ফুলের গাছ রোপণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মধ্যে দাউদকান্দি থেকে ময়নামতি, ময়নামতি থেকে বাতিশা, বাতিশা থেকে ধুমঘাট, ধুমঘাট থেকে সীতাকু- এবং সীতাকু- থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেইট পর্যন্ত ৫টি প্যাকেজে কাজ চলছে। এ কাজের তদারকি করছেন ফোরলেন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা। আগামী দুই বছর পর্যন্ত রোপণকৃত এসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আফতাবুল ইসলাম খান বলেন, ‘কার্যাদেশ অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবার কথা। এছাড়া আগামী দুই বছর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মহাসড়কে রোপণকৃত এসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এসব গাছের মধ্যে কোনো গাছ মরে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে তারা ওই গাছটি প্রতিস্থাপন করবে। যেহেতু আমরা প্রকৌশল বিভাগের তাই এসব গাছ বিশেষভাবে তদারকির জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরবরিকালচারের (বৃক্ষপালন বিট) পরামর্শ নেয়া হচ্ছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন