শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কালীগঞ্জে বাড়ছে পাট চাষ

আশিকুর রহমান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

ছোট বেলাই পাঠ্য পুস্তকে পড়েছি পাট আমাদের সোনালি আঁশ। সেই সোনালি অতীত কিছুটা মলিন হয়ে গিয়েছিল কিন্তু ধিরে ধিরে আবারও ফিরে পাচ্ছে সেই ঐতিহ্য। মাঠের যেদিকে তাকাই সেদিকেই চোখ জুড়িয়ে যায় সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে বাংলার সোনালি আঁশ। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় গত দুই বছরে তুলোনায় পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন। দাম এরকম থাকলে আগামীতে পাট চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় এবার ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা মণের পাট দাম বেড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ বাস্তবায়নে ফলে ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার ও চিনির বস্তা হিসেবে বাধ্যতামূলক পাটের বস্তা ব্যবহারে তৎপর হয় সরকার। এতে করে পাটের দাম আরো বেড়ে যায়।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, এভাবে পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুই বছরে বেড়েছে পাট চাষও। এখন কৃষকরা চলতি মৌসুমের পাটের জমি পরিচর্যার ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে সেচ দেয়া, জমিকে আগাছা মুক্ত করা, সময় মতো সার প্রযোগ প্রভৃতি পরিচর্যা করছেন।
উপজেলার নগর চাপরাইল গ্রামের পাট চাষি জাবের মন্ডল জানান, গত বছর মাত্র ১৮ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম এবার পাটের দাম ভালো হওয়াতে দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাট চাষে কোনো সহযোগিতা পাইনি। তবে অন্য ফসল চাষে তিনি সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান ওই কৃষক। একই গ্রামের কৃষক নওশের আলী জানান, তিনি এবার ১ বিঘা ১১ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছেন। আশা করছেন দাম ভালো পাবেন। ষাটবাড়িয়া গ্রামের পাট চাষি কবিরুল ইসলাম নান্নু জানান, গত বছর আমি পাট চাষ করিনি কিন্তু এবার পাটের দাম বেশি হওয়াতে ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি আশা করি ফলন ও ভালো হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় আমরা ২৫ জন কৃষকের প্রদর্শনী দিয়েছি। প্রত্যেক কৃষককে সার, বীজ, ও ক্ষেত পরিচর্যার জন্য ২৫শ’ করে টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি জানান, আমাদের প্রয়োজন ৩৪ জন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা, সেখানে মাত্র ১২জন। জনবল কম থাকায় আমরা সবার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারি না। তবে কৃষক মাঠ স্কুল থেকে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও ফসলের রোগ বালাই সম্পর্কে সচেতন করে থাকি। মাঠ দিবসেও আমরা কৃষকদের সাথে তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা আলোচনা করে থাকি। কোনো কৃষক যদি তার কোনো অসুবিধার কথা আমাদের জানান তাহলে আমরা সাথে সাথে তার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে থাকি।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, গত দুই বছরের তুলনায় এবার পাটের চাষ অনেক বেশি হয়েছে। ১৮-১৯ অর্থ বছরে পাট চাষ হয়েছিলো ১৩শ’ ৪০ হেক্টর, ১৯-২০ অর্থ বছরে পাট চাষ হয় ১৫শ’ হেক্টর, সে তুলনায় ২০-২১ অর্থ বছরে পাট চাষ বেড়ে দাড়ায় ১৮শ’ ১৯ হেক্টর। পাটের দাম ভালো পাওয়াতে কৃষকদের পাট চাষের দিকে আগ্রহ বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন