সব বাঁধা পেরিয়ে সিলেট-৩ আসনে নৌকার কান্ডরী হলেন হাবিবুর রহমান হাবিব। অবসান হলো দীর্ঘ চরাই উৎরাইর। কর্মী বান্ধব হাবিব তৃণমূল রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিলেন, অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে। তরুণ এ নেতার সাথে কর্মীদের মিথশক্রিয়াও আস্থা বিশ্বাসে পরীক্ষিত। তারই পুরস্কার হিসেবে এবার হাতে উঠেছে তার নৌকা প্রতীক। সেকারনে এখন খুশি মহাখুশি দলের সর্বস্তরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। গতকাল (শনিবার) সকালে দলের মনোনয়ন বোর্ড এর অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্তে নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনীত হন তিনি। এ খবরে উচ্ছ্বাসিত হয়ে উঠে দলের নেতাকর্মীরা। আনন্দের ঢেউ লেগেছে গোটা নির্বাচনী এলাকায়। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে কাজ করছেন দলের সাথে। বিকল্প অবস্থান থেকে নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন আপনজনের মতো। সুদিনে দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীদের। ইতিপূর্বে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব না পেলেও তার কর্মতৎপরতা ছিল, একজন অভিভাবকের মতো।
মনোনয়ন পাওয়ার পর নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা সহকারে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি এক যুগ মানুষের পাশে ছিলাম আমি। সিলেট-৩ আসনের জনগণের সাথে আছি। আজ এর মূল্যায়ন পেয়েছি। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সব সদস্যের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার। আমি এই আস্থার প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করবো। অপর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, যারা মনোনয়ন চেয়েছিলেন তারা সকলেই যোগ্য। তারা সবাই আমার নেতা। উনারা প্রায় সবাই আমার সিনিয়র। তাদের সকলকে নিয়েই আমি কাজ করবো।
নিজের অনুসারীদের উদ্দেশ্যে হাবিব বলেন, আমার মনোনয়ন পাওয়ার খবরে কেউ মিষ্টি বিতরণ করবেন না। উল্লাস করবেন না। পারলে মসজিদে দোয়া করুন। যারা আমার সাথে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন তারা যাতে মনে কষ্ট না পান খেয়াল রাখতে হবে সেদিকেও।
এদিকে, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজসেবা সম্পাদক দায়িত্ব কাঁধে থাকলে, নিরবিচ্ছিন্নভাবে সময় দিয়েছেন নিজ নির্বাচনী এলাকায়। আন্তরিক কর্মকান্ডে তার মাঝে নির্ভরতা খুঁজে পেয়েছিল নেতাকর্মীরা। দলের সাথে নিবিড় সম্পর্ক হওয়ায় নবগঠিত সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। দায়িত্ব বেড়ে যায় আরোও। চলমান করোনাকালীন পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেবার মানসিকতায়। সব কিছুই তাকে করেছে সমৃদ্ধ উদার ও পরীক্ষিত। ত্যাগ তিতিক্ষার ধাপে ধাপে এখন তিনি পদার্পণ করেছেন নতুন এক অধ্যায়ে। এখন তার উপর পড়েছে দলের প্রতীক। সেই প্রতীকের মর্যাদা রক্ষায় আগামী ২৮ জুলাই মুখোমুখি হবেন নির্বাচনী যুদ্ধে। সেই যুদ্ধে শরীক হতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সমর্থন ও সহযোগীতাও প্রস্তুত। কর্মী বান্ধব এ নেতার জন্য নিবেদিত দলের প্রতিটি কর্মী। যেকোন মূল্যে বিজয় ছিনিয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তারা। নৌকার মনোনয়ন আ’লীগ নেতা হাবিবের নিশ্চিতের খবরে নির্বাচনী এলাকায় হাবিবের অনুরাগীরা পরস্পরের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এছাড়াও দক্ষিণ সুরমা বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জে আনন্দ মিছিল বের করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ তিন উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে শুকরিয়া আদায় করে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বাদ আসর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী জামে মসজিদে শুকরিয়া আদায় করে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। মাহফিলে সবার উপস্থিতি কামনা করেছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ অ্যাডভোকেট।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ২৫ জন নেতা। এরমধ্যে হাবিবকে মনোনীত করে দল। সিলেট-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলোকে উন্নয়নের মডেলে পরিণত করতে চাওয়া একটি সুপ্ত বাসনা দীর্ঘদিন ধরে লালন করছেন হাবিব। সেই সুযোগ এখন তার দোরগোড়ায়। এ প্রসঙ্গে হাবিব বলেন, ২০১৪ এ ১৯ সালের নির্বাচনেও আমি সিলেট-৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তখন পাইনি। তবু এলাকার মানুষের সাথে ছিলাম। এই এলাকার উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে আমার।
প্রসঙ্গত, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ সংসদীয় আসন। এ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস-সামাদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ জুলাই ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন