পোশাক শিল্পে কাষ্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত নীতি সহায়তা দেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ। সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে শিল্পকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাষ্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত নীতি সহায়তা দেয়া হলে তা শিল্পকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়তা করবে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ এর একটি প্রতিনিধিদল গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেগুন বাগীচাস্থ’ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অনুরোধ জানান। বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী, সাবেক সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), বিজিএমইএ’র ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার) ও সাবেক পরিচালক মো. মুনির হোসেন প্রমুখ। সভায় বিকেএমইএ এর ১ম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে সদস্য (আয়কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য (শুল্ক নীতি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. মাসুদ সাদিক ও সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. আব্দুল মান্নান শিকদার উপস্থিত ছিলেন । সভায় সার্বিকভাবে পোশাক শিল্পে বিদ্যমান কাষ্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাকালে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত জরুরি কাষ্টমস, ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাবনাও উত্থাপন করেন। রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে যৌক্তিকতা অনুযায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের উত্থাপিত প্রস্তাবনা - বিজিএমইএ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি সমন্বয়ে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের বিষয়ের সঙ্গে একমত পোষন করে বলেন যে, কমিটি গঠিত হলে তা পোশাক শিল্পে বিরাজমান কাষ্টমস, আয়কর ও ভ্যাট সংক্রান্ত ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করতে পারে। তিনি প্রতিনিধিদলকে বলেন, ভ্যাট রিটার্ন দাখিল বাদ দেয়া যাবে না। তবে সব প্রতিষ্ঠান যদি নিয়মিতভাবে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে, তবে অতিরিক্ত কোন প্রত্যয়নপত্র লাগবে না বলে ইতিমধ্যে রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারী হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে- পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নগদ সহায়তার উপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ হতে হ্রাস করে ০ শতাংশ নির্ধারন করা এবং তা আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা। রফতানীর বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর (শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ) চ‚ড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা। তৈরী পোশাক শিল্পের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ এবং গ্রীন কারখানার জন্য ১০ শতাংশ আগামী ৫ বছর পর্যন্ত বলবৎ রাখা। এসআরও তালিকাভ‚ক্ত সব অগ্নি-নির্বাপন পণ্য/উপকরণ বিকল বা নষ্ট হলে অগ্নি-প্রতিরোধক দরজার ন্যায় একই শর্তে প্রতিস্থাপনের জন্য রেয়াতী হারে শুল্কায়নের মাধ্যমে আমদানীর সুবিধা দেয়া। ইপিজেড’স্থ প্রতিষ্ঠানের সাথে সাব-কন্ট্রাকসহ বিভিন্ন কার্য্যক্রম সম্পাদনের জন্য অস্থায়ী বন্ড স্থানান্তর প্রক্রিয়া সহজীকরণ করাসহ আরো বেশ কিছু প্রস্তাবনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন