বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সোলারের আলোয় আলোকিত কাজিপুরের চরাঞ্চল

প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে

টিনের বেড়া ও ছাউনির একটি ঘর। মাঝখানে ফুটখানেক ফাঁকা। পাশেই পাট খড়ির বেড়া ও টিনের ছাউনির আরেকটি ঘর। ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে একটি ষাঁড়। ঘর দু’টোর পেছন দিয়ে গজিয়ে উঠেছে বেশ কিছু গাছপালা। বানের পানি প্রবেশ করায় গাছগুলো পাতাহীন হয়ে পড়েছে। গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে অপেক্ষাকৃত একটি মোটা গাছ। গাছের গোড়ায় বসানো হয়েছে একটি সোলার প্যানেল। এখানে এসে পড়ছে সূর্যের আলো। তৈরী হচ্ছে বিদ্যুৎ। এরপর সেই বিদ্যুৎ থেকে সৃষ্ট আলো চরের ঝুপড়ি ঘরকে করছে আলোকিত। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, মনসুর নগর, চরগিরিশ, নিশ্চিন্তপুর, তেকানী, মাইজবাড়ী, শুভগাছা ও খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে অসংখ্য সোলার প্যানেলের। এসব সোলার প্যানেল চরাঞ্চলের বসতবাড়ি, হাটবাজার, সরকারি-বেসরকারি, ধর্মীয়, ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মোবাইল কোম্পানীর টাওয়ারসহ নানা স্থানে বসানো হয়েছে। আর সেই সোলারের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে চরাঞ্চল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাটুয়ারপাড়া গুলেরমোড় থেকে শুরু করে পুরো হাটবাজার এলাকায় অবস্থিত ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটের চালার ওপরে বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। অসংখ্য বসতবাড়ির একই চিত্র। স্থানীয় গুলমোড় একটি মসজিদেও দেখা গেলো সোলার প্যানেল। আবার অনেক বসতবাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাদেও একই দৃশ্য বিরাজমান। গুলেরমোড় থেকে নাটুয়ারপাড়া হাটের মূল অংশে প্রবেশের বেশ আগে মোবাইল কোম্পানির দু’টো বিশাল টাওয়ার চোখে পড়বে। সেই টাওয়ারে বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের জন্য বসানো হয়ে সোলার প্যানেল। গ্রামীণ আলো সোলার সিষ্টেমের নিশ্চিন্তপুর শাখার কো-অর্ডিনেটর আলমগীর হোসেন জানান, প্রতিটি সোলার ইউনিট স্থাপন করতে ৮-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। এককালীন টাকা জমা দিয়ে এসব সোলার প্যানেল কেনা যায়। পরে বাকি টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। সূত্রে জানা গেছে, এসব চরাঞ্চলে এক হাজারের অধিক সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক প্যানেল বসানোর প্রস্তাব রয়েছে। এতে কোন লোডশেডিংয়েরও ঝামেলা নেই। আব্দুর রহিম মাষ্টার, জয়নাল বিএসসি, চেয়ারম্যান জহুরুল হক মিন্টসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এসব চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ আসার কোন সুযোগ নেই। তাই মানুষ সম্পূর্ণভাবে সোলারের আলোর ওপর নির্ভরশীল। এই আলোয় চরাঞ্চলের মানুষ রাতের অনেক সময় ধরে কাজকর্ম করতে পারছেন। সঙ্গে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা গভীর রাত পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পারছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন