বাংলাদেশ অভ্যন্তÍরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষর নির্মিত তিনটি ফেরিঘাট দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ঘাট তিনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। তবে এই তিনটি ফেরিঘাট কোন কাজে আসছে না যান পারাপারে।
জানা যায়, দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ১, ২ ও ৬ নম্বর ঘাট তিনটি এক বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে, ১ ও ৬ নম্বর ঘাটে কোন পন্টুন না থাকলেও ২ নম্বর ঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নিজ পন্টুন রয়েছে। তবে এই ঘাট ও পন্টুন ব্যবহার করছে দুটি বেসরকারি কোম্পানি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১ নম্বর ফেরি ঘাটের পন্টুনের সাথে বিআইডব্লিউটিসির উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ নোঙর করে রাখা হয়েছে। ওই ঘাটটিতে কোন ফেরি ভিড়তে পারে না। ২নং ঘাটটি দুই বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে কার্গো থেকে সার, সিমেন্টসহ পণ্য লোড আনলোডের কাজে ব্যবহার করছে। বিধায় এই ঘাটটিতেও কোন ফেরি ভিড়তে পারে না। তবে ঘাট ইজাদার খাজনা বাবদ বস্তা প্রতি টাকা নিয়ে থাকেন ওই কোম্পানির কাছ থেকে। এদিকে তিন কোটি টাকার অধিক ব্যয়ের ১নং ফেরি ঘাটটি নির্মিত হলেও ৪/৫ বছর ধরে অকেজো থাকায় ঘাটটি এলাকাবাসী ব্যবহার করছে। কারণ ঘাটে পন্টুন না থাকায় ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। ৬নং ফেরি ঘাটও পন্টুন না থাকায় গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ৭নং ফেরি ঘাট সচল থাকলেও স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ব্যবহারের অযোগ্য। কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে, ওই ঘাট দিয়ে বালু ব্যবসায়ীদের জন্য স্বাভাবিক গাড়ি চলাচল করতে বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি যানবাহনের চালক ও সাধারণ মানুষের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, ফেরিঘাট নির্মাণ করে বিআইডব্লিউটিসিএ এবং পন্টুন দিয়ে থাকে বিআইডব্লিউটিসি। দৌলতদিয়া পারে ৭টি ঘাট রয়েছে, এখানে ৭টি পন্টুন থাকার কথা থাকলেও বিআইডব্লিউটিসি’র পল্টুন রয়েছে মাত্র ৪টি। ২নং ফেরি ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ’র একটি নিজস্ব পল্টুন রয়েছে, পন্টুন সংকটে নির্মিত ঘাটগুলো বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার মহাব্যবস্থাপক মো. ফিরোজ শেখ বলেন, ফেরিঘাট সংশ্লিষ্ট আমাদের কাজ নয়। ঘাটগুলো মেরামত করে থাকেন বিআইডব্লিউটিএ আমরা শুধু ফেরি নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। তিনি আরো বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ছোট বড় ১৪টি ফেরি রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিএ’র এক প্রকৌশলী বলেন, পাটুরিয়া পাড়ে ৪টি ঘাট ও ৪টি পন্টুন রয়েছে, একই গাড়ি ও একই ফেরি সেখানে দৌলতদিয়া পারে ৭টি ঘাটের কোন প্রয়োজন নেই। তবুও অকারণে ৩টি ঘাট রয়েছে। যে ঘাটগুলো ৩টি পন্টুন সংকটে বন্ধ রয়েছে। এদিকে ২নং ঘাটে কাজ করছেন এমন এক শ্রমিক বলেন, এই ২নং ফেরি ঘাট ব্যবহার করে আমরা সারাবছর কাজ করছি। এই ঘাটে কোন প্রকার ফেরি আসে না। এই ঘাট ব্যবহার করতে কোনো টাকা লাগে কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঘাটের ইজারাদার আছে, এই ইজারাদাররা বস্তা প্রতি টাকা নিয়ে থাকেন। এর বাইরে কি হয় আমরা জানি না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ’র) আরিচা বন্দরের উপ-প্রকৌশলী মো. সহিদুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ঘাটগুলো ভালো রয়েছে। তবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে ঘাটগুলো কাজ করতে হয়। এই কাজগুলো (বিআইডব্লিউটিএ’র) চলমান কাজ। সারা বছর এই কাজগুলো করতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন