করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করতে নতুন করে ১লা জুলাই থেকে সারা দেশব্যাপী শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। এই লকডাউনকে সফল করার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি এবারই প্রথম মাঠ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
সূত্রে জানা গেছে, জেলার রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৭২টি ওয়ার্ডের জন্য ২৮৮০জন প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ৩২টি দল। ৩টি করে ওয়ার্ড মিলে ১টি করে দল কাজ করছে। প্রতিটি দলে ৪০জন শিক্ষক শিফট অনুসারে দায়িত্ব পালন করছেন। শিফট অনুসারে কোনও দল দিনের প্রথম ভাগে আবার কোনও দল দিনের শেষ ভাগে কাজ করছেন। এই সব শিক্ষকরা মফস্বল থেকে শুরু করে গ্রামের বিভিন্ন মোড়ের বাজার, রাস্তায় বের হওয়া সাধারণ মানুষ ও ভ্যান চালক, জনমুখর স্থানের চা স্টলগুলোতে গিয়ে বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে বের হওয়া জটলা তৈরি করা মানুষদের বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বাহিরে বের হলেও অবশ্যই মাস্ক পড়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করছেন। এছাড়াও মাস্ক বিহীন মানুষদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করাসহ নানা রকমের সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। এতে করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হচ্ছেন। যার কারণে আগামীতে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কমে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
শিক্ষক চাঁদ আক্তার বানু, প্রভাষক নুরুজ্জামানসহ অনেকেই জানান, বৈশ্বিক এই করোনা মহামারি সম্পর্কে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা এখনোও অসচেতন। তাই সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক চলমান লকডাউনকে সফল করার লক্ষ্যে আমরা ডোর টু ডোর গিয়ে মানুষদের সচেতন করার মতো কাজ করতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি। এই ধরনের কর্মকান্ড অব্যাহত থাকলে এবং সঠিক ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আগামীতে অবশ্যই আমরা করোনা মুক্ত হবো।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধক শিক্ষক কমিটির সমন্বয়ক প্রভাষক দেওয়ান মতিউর রহমান স্বপন বলেন সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শক্রমে আমরা মাঠে নেমেছি। কারণ শিক্ষক হচ্ছেন সমাজের দর্পণ। শিক্ষকদের সবাই মর্যাদা করেন। তাই এই মহামারি করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনাকে সফল করার লক্ষ্যে শিক্ষকরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। করোনা ভাইরাসকে দেশ থেকে দূর করতে এবং সাধারণ মানুষদের আরো বেশি সচেতন করার লক্ষ্যে যতদিন মাঠে কাজ করার প্রয়োজন হবে আমরা শিক্ষকরা ততদিন মাঠে থাকবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন লকডাউন সফল করতে আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করছি। আমাদের পাশাপাশি এবার মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন শিক্ষকরাও। মাননীয় খাদ্য মন্ত্রীর পরামর্শক্রমে ও জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক লকডাউন সফল করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের নিয়ে করোনা প্রতিরোধক কমিটি গঠন করা হয়েছে। লকডাউনের এই কয়েক দিনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। যার কারণে জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে রাণীনগর উপজেলায় লকডাউন শতভাগ সফল হচ্ছে বলে আমি মনে করি। এই সফলতার পেছনে প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষকদের ভূমিকাও অনেক বেশি কারণ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের ঘরে ঘরে যাওয়া সম্ভব নয় কিন্তু স্থানীয় শিক্ষকরা এই কাজটি করতে পারছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন