পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার বোর্ড বাজার এলাকায় চাওয়াই নদীর তীরবর্তী দুই ইউনিয়নের দশ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এখন গামছা। এতে সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বয়স্ক, শিশু ও কৃষকের ফসল পারাপারে। উপজেলা শহর ও বোর্ড বাজারের সাথে একমাত্র যোগাযোগের সহজ পারাপার এ নদ। দীর্ঘদিন ধরে নদের ওপর কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপার করছে হাজারো মানুষ।
জানা যায়, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে আর সাঁকোর খুটিতে কচুরি পানা লেগে ভেঙে পড়ে অর্ধেক অংশ। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। প্রতিদিন এ সাঁকো দিয়ে ৪-৫ হাজার মানুষের চলাচল। সাঁকো না থাকায় জরুরি কাজে এখন কেউ যাচ্ছে কয়েক কি.মি. পথ ঘুরে। আবার কেউ একমাত্র নদ পারাপারে গামছার ওপর ভরসা করছে। এক পারে অমরখানা ও আরেক পারে সাতমেরা ইউনিয়ন মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে চাওয়াই নদী। পারাপারের ভরসা আগে ছিল একফালি কাঠের সাঁকো। ভরা বর্ষায় নদের জল আর কচুরিপানা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সাঁকোর অর্ধেক অংশ। কোনো উপায় না পেয়ে পানি ডিঙিয়ে এপার থেকে ওপার কাপড় গুটিয়ে গামছা পরেই চলে নদী পারাপার। বর্ষার পানি তলিয়ে গিয়ে কত যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার কোনো হিসেব নেই। বছরের পর বছর এভাবে ঝুঁকি নিয়েই চলছে পারাপার। স্থানীয়রা বলছেন, এ দুর্ভোগ কি শেষ হবে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, আখিমুল নামের পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি কাপড় গুটিয়ে গামছা পড়ে বাইসাইকেল ঘাড়ে নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। তিনি বলেন, বোর্ড বাজার ও পঞ্চগড় শহর যাওয়ার এটা সহজ যোগাযোগের পথ। এই কষ্ট আর কতদিন করবো। এখানে কর্তা ব্যক্তিরা খালি মেপে যায় কিন্তু সেতু আর হয় না। সাদ্দাম নামের এক যুবক বোর্ড বাজার থেকে খইপাড়া তার বাড়ি ফিরছে। সেও কাপড় গুটিয়ে গামছা পড়ে নদীতে নেমে কাপড় শুকনা রাখতে একহাত উপরে রেখে সাঁতরিয়ে পার হচ্ছে। তিনি বলেন, সেতুর অভাব আর কাঠের সাঁকো ভেঙে পড়ায় খইপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, বদিনাজোত, ফকিরপাড়াসহ দশ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি তারাতারি কাঠের দ্রুত সাঁকো যেন সংস্কার করে। হাবিবুর রহমান জানান, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়াই চরম বিপাকে পড়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, ভরা বর্ষায় সাঁকোর খুঁটিতে কচুরিপানা লেগে অর্ধেক অংশ ভেঙে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে সাঁকোটি সংস্কার করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন জানান, সাঁকো সংস্কারের জন্য চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন