রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশের এএসআই ও কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতরা হচ্ছেন- এএসআই লিটন মিয়া ও পুলিশ কনস্টেবল এম. এ. লতিফুর রহমান (৩০)। ডিএমপির এডিসি (মিডিয়া) মো. ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতলে লিটনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক চালক তৌহিদুল ইসলামকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রোববার রাতে এএসআই লিটন মিয়া গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় কালো রঙের একটি প্রাইভেটকার চেকপোস্টের সামনে এলে গাড়িটি থামানোর সংকেত দেন এএসআই লিটন। চালক গাড়ি না থামিয়ে লিটনকে ধাক্কা দেন। এতে তিনি গাড়ির বনেটের ওপর পড়েন। এই অবস্থায় গাড়িটি না থামিয়ে দ্রুত গতিতে গুলশান থেকে গাড়ি চালিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার শান্তা টাওয়ারের সামনে লিটনকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান চালক। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত লিটনকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ওই সূত্র জানায়, গুলশানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে গাড়ির নম্বর সংগ্রহ করে গুলশান থানা পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে গত ৫ জুলাই সোমবার ঘাতক চালক তৌহিদুলকে গ্রেফতার করে এবং গাড়িটি জব্দ করা হয়। গত ৬ জুলাই সকালে তৌহিদুলের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, চালক তৌহিদুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত এএসআই লিটন মিয়া গুলশান থানায় কর্মরত ছিলেন।
অন্যদিকে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল লতিফুর রহমান (৩০) আহত হন। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরির সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে পড়ে ছিলেন ওই পুলিশ সদস্য। তখন সেখানকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাভার থেকে ফিরে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে তুলে দিয়ে হাসপাতালে পাঠান। গুরুতর আহতাবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, তার আইডি কার্ড থেকে নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে। তিনি শাহবাগ থানার হাইকোর্ট মাজার মসজিদের উত্তর গেটে ডিউটি করতেন। ডিউটি শেষে যাত্রাবাড়ীর বাসায় যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত কোনো দ্রুতগামী গাড়ি তার মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায়। বর্তমানে যাত্রাবাড়ীর ধনিয়া এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতেন। পুলিশ গাড়ি শনাক্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারে কাজ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন