তাজ উদ্দীন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) থেকে
লোহাগাড়া উপজেলার আভ্যন্তরীণ কঁাঁচা- পাকা সড়কগুলোতে বেপরোয়া বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে সড়ক ও ব্রিজ ভেঙে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। দৈত্যাকার বালুর গাড়িগুলোর ভার সইতে না পেরে প্রতিনিয়ত ভাঙছে সড়কগুলো। উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামীণ সড়কগুলোতে নিত্যদিন চলাচল করছে বালুর গাড়িগুলো। গাড়িগুলো আজ এই রাস্তা ভেঙেছে তো কাল অন্য রাস্তায় গিয়ে তাও ভাঙছে। উপজেলার ডলু, হাঙ্গর, সরাই, টংকাবতীসহ বিভিন্ন খাল থেকে নিয়মিত বালু উত্তোলন করে বড় বড় ট্রাকে করে তা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর ধারণ ক্ষমতা যথাক্রমে ১০ থেকে ১৫ টন হয়ে থাকে। আর বালু বহনকারী দৈত্যাকার খালি ট্রাকের ওজনই রয়েছে ৯-১০টন। ট্রাকগুলোতে বালু নেয়া হয়ে থাকে ২৫-২৬ টন। বালু বহনকারী ট্রাকগুলো গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে থাকলে কয়েকমাস পরই রাস্তার অবস্থা কাহিল হয়ে উঠে। রাস্তা ভেঙে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এর উপর আবার কালভার্টও পাল্লা দিয়ে ভেঙে পড়ছে। ইতিমধ্যে পুটিবিলা সরাই খালের ব্রিজ, পানত্রিশা বুড়ির ঝিরি ব্রিজ, পুটিবিলা রামবিলা সড়কের কেইচ্ছা ঝোড়া ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। বালুর গাড়িগুলো একটি রাস্তা দিয়ে কয়েকদিন চলে ওই রাস্তাটি যখন ভেঙে যায় তখন অন্য রাস্তা ধরে চলাচল করে। যার কারণে বর্তমানে লোহাগাড়ার ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ দরবেশহাট ডিসি সড়ক, চুনতি শাহ জব্বারিয়া সড়ক, চুনতি ফারাঙ্গা সড়ক, চুনতি জয়নগর সড়ক, আধুনগর হরিনা সড়ক, কালিহাট ডিসি সড়ক, আধুনগর আমতলী সড়ক, আমিরাবাদ স্কুল সড়ক, আমিরবাদ সুখছড়ি কালিবাড়ী সড়ক, জঙ্গল পদুয়া সড়ক, চরম্বা রাজঘাটা সড়ক, পদুয়া আধারমাসিনক সড়ক, পদুয়া ধলিবিলা সড়ক, চরম্বা মহাজন মসজিদ সড়ক, চরম্বা বাইয়ার পাড়া সড়ক, চরম্বা টেকের দোকান সড়ক, সুখছড়ি উজিরভিটা সড়ক, আধুনগর উজিরভিটা সড়ক, পুটিবিলা ডিসি সড়ক, পুটিবিলা দেওয়ানজী সড়ক, পুটিবিলা নাথপাড়া সড়ক, পুটিবিলা রামবিলা সড়ক, পুটিবিলা নয়াপাড়া সড়ক, গৌড়স্থান হরিনা সড়ক, গৌড়স্থান নয়াপাড়া সড়কসহ এলাকার ছোট বড় অর্ধশতাধিক সড়ক বর্তমানে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বালু ব্যবসায়ীরা সরকারদলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় রয়েছে। যার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে কোন সময় কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। চুনতি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গ্রামীণ সড়কগুলোর উপর অতিরিক্তি বালু বহনকারী গাড়িগুলোর ব্যাপারে যদি কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে গ্রামীণ রাস্তাগুলো হয়তো পুরোপুরিই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন