সাতক্ষীরার বিখ্যাত আম বিদেশ রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। মহামারি করোনার কারণে ইউরোপের বাজারে এবার পৌঁছেছে মাত্র ১২ মেট্রিক টন আম। যা লক্ষ্যমাত্রার ২.৪ ভাগ। তবে, বিগত বছরের চেয়ে এবছর আম উৎপাদন হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতের (খামার বাড়ি) উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নূরুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিলো। উৎপাদন হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বিগত বছরের তুলনায় ১০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। তিনি বলেন, বিষমুক্ত সাতক্ষীরার ল্যাংড়া, হিমসাগর, আমরুপালি ও গোবিন্দভোগ আম বিখ্যাত। ইউরোপের বাজারে এর চাহিদা অনেক। কয়েক বছর ধরে হাজার হাজার কেজি আম বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। এবার বিদেশে আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫০০ মেট্রিক টন বা ৫ লাখ কেজি। কিন্তু করোনার কারণে মাত্র ১২ হাজার কেজি (১২ মেট্রিকটন) আম রফতানি হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে এবার শুধুমাত্র ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালিতে ১২ মেট্রিক টন হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ ও আমরুপালি রফতানি হয়েছে। ডেনমার্ক ও জার্মানি আম নিতে পারেনি। কৃষিবিদ বলেন, বিদেশে আম রফতানি বেশি হলে সরকার যেমন রাজস্ব পান তেমনি চাষিরাও লাভবান হয়ে থাকেন। একই সাথে সাতক্ষীরার সুনাম বৃদ্ধি পায়। আম উৎপাদনে চাষিরা উৎসাহী হন।
সাতক্ষীরা সদরের কুখরালি গ্রামের আম ব্যবসায়ী মোছেদুল আলম মক্কে বলেন, বহুদিন ধরে তিনি আম চাষের সাথে জড়িত। ২০১৪ সালে প্রথম তার বাগানের আম বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলো। এবছরও আমের বম্পার ফলন হয়েছে। তবে, অন্য বছরের তুলনায় বাজারে আমের দর ছিলো কম। একটি বাগানে যে টাকা খরচ হয়, আম বিক্রি করে সেই টাকা উঠানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়েছে। করোনা মহামারিতে বিদেশে আম কম যাওয়ায় সকল ব্যবসায়ী সাতক্ষীরার স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করেছে। আবার কিছু আম ঢাকায় গেছে। সব মিলিয়ে ক্রেতাদের লাভ হয়েছে, এমনটিই বললেন এই আম চাষি। তিনি আরো বলেন, একটি বেসরকারি এনজিও তাদের পছন্দের লোকদের সুদে লোন দিয়ে সেই বাগানের আম বিদেশ পাঠায়। অথচ সরকারিভাবে কোনো সহায়তা দেয়া হয় না চাষিদের। তিনি সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা না দেয়া হলেও অন্য সবধরণের সহায়তা আম চাষিদের দেয়া হয়। এছাড়া, এনজিও সংস্থাটি তাদের প্রশিক্ষিত চাষিদের কাছ থেকে আম কিনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। তারা আমাদের (খামার বাড়ির) সহায়তা নিয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন