কুড়িগ্রামে জবরদখলকৃত জমি উদ্ধার ও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান ভুক্তভোগী পরিবারের সন্তান শুকদেব বর্মণ। এসময় জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য কুমরপুর মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত: গঙ্গারাম বর্মণের পূত্র শুকান্ত বর্মণের ভোগদখলীয় বসতভিটা ও ক্রয়কৃত মোট ৩১শতক জমি জবরদখল করার জন্য গত ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর পার্শবর্তী কুড়ারপাড় গ্রামের ভুমিদস্যু গাজিউর রহমান ও তার ভাই মমিনুল ইসলাম, তাদের স্ত্রী শাহনাজ বেগম ও আয়শা আক্তারসহ রোকেয়া বেগম ও পারুল বেগম লাঠিসোটা নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় শুকান্ত বর্মণের স্ত্রী সাবেত্রী রানীর উপর হামলা চালায়। এসময় তাকে মারপীট ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং ভিটা সংলগ্ন জমি বেড়া দিয়ে জবরদখল করে। এনিয়ে চলতি বছরের ২৬ মে ভোগডাঙ্গা ইউনিযন পরিষদে চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের উপস্থিতিতে দুইজন বিজ্ঞ আইনজীবীর উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে দলিলপত্রাদি যাচাইয়ান্তে শুকান্ত বর্মণের পক্ষে রায় ঘোষণা করে সালিশ বৈঠককারীরা।
রায় অমান্য করে ৩জুন দ্বিতীয় দফা সাবিত্রি রানীর উপর লাঠিসোটা ও ছুরি দিয়ে হত্যার উদ্যোশে আবারো হামলা চালায় ভুমিদস্যুরা। হামলায় গুরুতর আহত সাবেত্রী রানীকে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ওই হামলায় সাবেত্রী রানীর সারা শরীরসহ চোখের উপর কপালে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এসময় হামলাকারীরা হিন্দু পরিবারটিকে জমিজমা ছেড়ে দেশত্যাগ না করলে খুন করবে বলে শাসায়। ওইদিন রাতেই শুকান্ত বর্মণের পূত্র শুবদেব বর্মণ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ ঘটনায় পুলিশ চলতি মাসের ৩ জুলাই মূল আসামী গাজিউর রহমানকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। ১৮ জুলাই আদালত থেকে জামিন বেড়িয়ে আসে সে। জামিনে বেড়িয়ে এসেই নিরিহ পরিবারটিকে আবারো ভয়ভীীত ও বাড়িভিটা ছেড়ে দেশ ত্যাগের হুমকী দেয়। নাহলে কেউ প্রাণে বাঁচবে না বলে শাসায়। এতে প্রাণের ভয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বলে শুকান্ত বর্মণ জানান। তিনি আরো বলেন, আমি পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোন মূহুর্তে আমাদের প্রাণের উপর হামলা হতে পারে। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। পুলিশ তাদের পক্ষে থাকায় বারবার আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে। আমরা পরিবারের নিরাপত্তা ও জবরদখলকৃত জমি উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসনসহ আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীরা ছাড়াও জেলা হিন্দু-বৈদ্য-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ছানালাল বকসী ও সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার, পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রবি বোসসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন