মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলোর সিন্ডিকেট করে অনৈতিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধির করছে। এতে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হিমসিম খাচ্ছে বিদেশগামীকর্মীরা। চড়া দামে টিকিট কিনতে না পেরে বিদেশগামী অসহায় কর্মীরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া বহন করে যথাসময়ে কর্মস্থলে যাওয়া অভিবাসী কর্মীদের কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনতিবিলম্বে বিদেশগামী কর্মীদের বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার নয়া পল্টনস্থ একটি হোটেলে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আটাবের সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম। আরো উপস্থিত ছিলেন, হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, আটাবের সহ সভাপতি মোহাম্মদ জুম্মন চৌধুরী, এন সি বৈরাগী বাবু, মহাসচিব মাজহারুল হক ভূঁইয়া, ফোরাব মহাসচিব মো.মহিউদ্দিন, বায়রার সাবেক শীর্ষ নেতা কে এম মোবারক উল্লাহ শিমুল, রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্য পরিষদের সভাপতি এম টিপু সুলতান, হাবের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, বায়রার সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন, হাবের শীর্ষ নেতা মাওলানা ফজলুর রহমান, বায়রার সাবেক ইসি সদস্য লিমা বেগম, ইসি সদস্য সায়েম এম হাসান, এফ আর করিম কাজল, ওলিউর রহমান ও মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, অতি সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে এয়ারলাইন্সগুলো প্রতিযোগিতামূলক ভাবে তিন গুণ ভাড়া বৃদ্ধি করছে। যার কারণে অভিবাসী কর্মীরা বিড়ম্বনার শিকার এবং অভিবাসন ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে এয়ারলাইন্সের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ও আসন সঙ্কট রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসী কর্মীদের অনেকেই বিমানের আসন সঙ্কট এবং বিমানের টিকিটের বর্ধিত অসহনীয় ভাড়ার জন্য কর্মস্থলে যেতে পারছে না। অসহায় এই দরিদ্র কর্মীরা বাড়িঘর, জমি বিক্রি করে, সুদের উপর টাকা নিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে টিকিট ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। অসহায় এই অভিবাসী কর্মীদের দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চমহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ছুটিতে আসা কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে যোগদানের জন্য প্রচন্ড চাপে রয়েছে। বিমানের অনৈতিক উচ্চ মূল্যের এই ভাড়া তাদের জন্য গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গমনেচ্ছু অভিবাসী যাত্রীদের বিমান ভাড়া গত নভেম্বর পর্যন্ত টিকিটের মূল্য ছিল ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা। বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। যা অযৌক্তিক অসম্ভব ও অনভিপ্রেত।
উল্লেখ্য, পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ হতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে এয়ারলাইন্সের ভাড়া তুলনামূলক ভাবে কম। এয়ার টিকিটের মূল্যের এমন লাগামহীন উর্ধ্বগতি অভিবাসীদের জন্য এক মহাসঙ্কট এবং দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক। সংবাদ সম্মেলনে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী অন্যান্য অপারেটিং এয়ারলাইন্সসমূহকে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে এয়ারলাইন্সসমূহের অতিরিক্ত শ্লটের অনুমোদনের প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে হবে। অপর দিকে, অভিবাসী কর্মীদের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন